নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আমাকে এখন কেউ বলবেন না আমি নির্বাচন করবো কি না। ডিসেম্বরে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এর আগেই অনেক খেলা হবে। শকুন আকাশে উড়তাছে। তাই আগে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। যারা প্রকৃত ত্যাগী কর্মী নেতা তারাই তো লড়বেন নির্বাচন করবেন। আল্লাহর হুকুম ও জনগণ চাইলেই আপনি হবেন। আমরা ১২ বছর ধরে ক্ষমতায়। আমাদের চর্বি মোটা হয়ে গেছে। আর সবার মাথায় ঢুকছে নৌকা পেলেই পাশ। স্টপ ইট। বাদ দিন। যারা মনে করেন নৌকা পেলেই পাশ রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। মনে রাখতে হবে জনগণ পাশে থাকলে পাশ তাহলে মাঠে থাকেন।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব মিলনায়তনে মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু প্রধানমন্ত্রী না। তিনি আমাদের কাছে আমাদের বিকল্প মা। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বললে অধিকার নিয়ে কথা বলি। আমরা যখন তাঁর সঙ্গে একদিন বসেছিলাম তখন তিনি আমাদের বলেছেন, ‘শামীম আমি হলাম নীলকণ্ঠি। আমি বিষ খেয়েও হজম করতে পারি।’ তাঁর সেই কথা আমি অনুসরণ করি। নেত্রী যদি সব হজম করতে পারে তাহলে আমরা কর্মীরা কেন পারবো না। কিন্তু এত বিষ হজম করতে হবে সেটা বুঝি নাই। শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেয় একজন শুনে ৫ জন। তাদের কেউ কেউ আমাকে খুনী বলতাছে কেউ ওমুক বলতাছে এসব এখন আর গায়ে লাগে না।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমার বাবা মা ও ভাই নাসিম ওসমানের নামে নারায়ণগঞ্জের তিনটি স্থাপনার নাম নামকরণ করা হয়েছে। অথচ আমি বিষয়টা জানতাম না। এটা জেনে আমি খুশী হয়ে নামাজ আদায় করেছি দোয়া করেছি। তার পর উল্টাপাল্টা কথা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছে টাকা খরচ করে এটা করা হয়েছে। আবল তাবল কুত্তা বিলাই কত কিছুই বলে। ওই ঘটনায় খোকন সাহা ক্ষুব্ধ হয়ে জিডি মামলা করেছেন। এতে আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে আমি অনুরোধ করবো এ মামলা প্রত্যাহার করে নেন। কারণ এসব কোন ব্যক্তিত্ব না যে তাদের প্রাধান্য দিতে হবে।’
তিনি বলেন, আমার বাবা মা ভাইয়ের কবরে শ্মশানের মাটি দেওয়া হয়েছিল। এতে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি গাড়িতে বসে কেঁদেছিলাম। আমি আশা করেছিলাম আমাকে ফোন করে বলবেন, ভাই বিষয়টা আমি দেখছি। কিন্তু সেটাও হয়নি। ঘটনার পরদিন যখন গেলাম তখন গিয়ে দেখি মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের কবরও মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলে। আমি ওই ঘটনায় কষ্ট পেয়েছিলাম। যদি আমি আমার কষ্ট বহিঃপ্রকাশ দেখাতাম চোখ দিয়ে পানি ঝরাতাম তাহলে নারায়ণগঞ্জে শুধু মাথা দেখা যাবে মাটি দেখা যাবে না। কিন্তু আমি সেটা করি নাই। করলে শয়তানদের জয় হতো।
শামীম ওসমান বলেন, আমি মনে করি আজকেই আমার শেষ দিন। তাই আমি সকলের কাছে আগাম মাফ চেয়ে নিচ্ছি। আমরা এমন নারায়ণগঞ্জ চাই যেখানে সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং, চাঁদাবাজী, সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না। তাই দেশের অন্য এলাকার আগে আমাদের ঘণ্টা বাজাতে হবে। কারণ সামনের ৬ মাস বেশ কঠিন সময়। অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে এ ৬ মাস খুবই ভয়াবহতা হতে পারে। তাই আমাদের এখন আমাদের একটাই টার্গেট শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাকে নিরাপদ রাখতে হবে।
সুতরাং আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম তাদেরকেই লড়াই করতে হবে। মাঠে থাকতে হবে। এ কারণে আগামী অক্টোবের শুরুতে একটি বড় সমাবেশ করবো। এর আগে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমরা কর্মী সভা করবো। ২৭টি ওয়ার্ডে কর্মী সভা করবো। আমিও পরে সবগুলো ওয়ার্ডে যাবো। এর পরে আমরা রাস্তায় নামবো। রাস্তার শ্রমিক রিকশাওয়ালা হকারদের জানাবো আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। আমার কোন আলিশান বাড়ির মালিককে দরকার নাই। এটা করতে হবে আমাদের ক্ষমতার জন্য না বরং দেশের স্বার্থে। আমি অনেক কিছু বলতে পারছি না। কিন্তু ভেতরে যা হচ্ছে তা খুবই ভয়ঙ্কর।
‘আমার সাথে থাকলে সামনে বিপদ। আর অন্য কারো সাথে থাকলে রসগোল্লা খেতে পারবেন। তাদের সঙ্গে জামায়াত বিএনপি হেফাজত সুশীল সমাজ সবাই আছে। তাই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রসগোল্লার সঙ্গে থাকবেন নাকি বিপদের সঙ্গে থাকবেন।’ বক্তব্যে যোগ করেন শামীম ওসমান।
মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় াণ্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ রশিদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগরের সহ সভাপতি চন্দন শীল, ওয়াজেদ আলী খোকন, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল প্রমুখ।









Discussion about this post