নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী এলাকায় নাজমুস সাকিব নাবিল (২০) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠে তার মা নাসরীন আক্তারের (৪৫) বিরুদ্ধে । ঘটনার পর থেকে নাসরিন আক্তার পলাতক থাকলেও পুত্র নাজমুস সাকিব নাবিল হত্যার এক দিনের মধ্যেই সোমবার বিকেলে নরসিংদী শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ । এ নিয়ে সৃাষ্ট হয় রহস্যের । হোটেলের রেজিস্টার খাতা অনুযায়ী নিহতের নাম রেহেনা আক্তার (৩০), তিনি নরসিংদী জেলার ডেউকাডি গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে হিসেবে উল্লেখ থাকলেও শেষ পর্যন্ত নরসিংদী থানা পুলিশ ফিঙ্গার প্রিন্ট যাচাই করে জানতে পারেন তিনিই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সেই নারী নাসরীন আক্তারের (৪৫)। যিনি মানষিক প্রতিবন্ধী এবং তার বিরুদ্ধে পুত্রকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার ৩১ মে বিকেলে নরসিংদী শহরের বাজিড়মোড়ের নিরালা নামক আবাসিক হোটেল থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, নরসিংদীতে উদ্ধার হওয়া নারীর লাশের বাবার নাম ও চেহারায় মিল পেয়েছি আমরা । লাশ শনাক্ত করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে ।
তবে ওই নারীর নাম নাসরিন হলেও হোটেলের রেজিস্টারে তার নাম রেহানা আক্তার লেখা ছিলো।
এর পূর্বে রোববার (৩০ মে) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে নাজমুস সাকিব নাবিল (২০) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়। নাবিলের মৃত্যুর জন্য নিহতের মা নাসরিন আক্তারকে দায়ী করছেন বাবা সগির আহমেদ। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নাসরিন আক্তারকে আসামি করে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করেন। তবে ঘটনার পর থেকেই নাসরিন পলাতক।
সোমবার বিকেলে নরসিংদী শহরের বাজীরমোড়ে একটি আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষের দরজা ভেঙে এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিরালা নামের আবাসিক হোটেল থেকে ওই লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববার (৩০মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই নারী একাই হোটেলে রাত্রিযাপন করতে আসেন। ওই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, গাজীপুর থেকে তিনি এসেছেন। রাত হয়ে যাওয়ায় হোটেলে থাকতে চান। রেজিস্টারে নাম-ঠিকানা লেখার পর ওই নারীকে হোটেলটির নিচতলার ৬ নম্বর কক্ষ দেওয়া হয়। ওই সময় তিনি একটি পলিথিনের ব্যাগে করে রাতে খাওয়ার জন্য নাশতা সঙ্গে এনেছিলেন। এরপর তিনি আর ওই কক্ষ থেকে বের হননি। সোমবার সকালে তাঁর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেন হোটেলটির কর্মচারীরা।
পরে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মুঠোফোনে ঘটনা জানানো হয়। দুপুরের দিকে পুলিশ এসে ওই কক্ষের দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ বলছে, খবর পেয়ে দুপুরের দিকে তারা ওই আবাসিক হোটেলে গিয়ে নারীকে ডাকাডাকি করে। সাড়া না পেয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দরজা ভেঙে ওই কক্ষে প্রবেশ করে পুলিশ। এ সময় গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় তারা। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ওই নারী আত্মহত্যা করার জন্যই গতকাল সন্ধ্যায় হোটেলটিতে উঠেছিলেন।
তবে যে মুঠোফোন নম্বরটি তিনি রেজিস্টারে উল্লেখ করেছিলেন, তা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি মুঠোফোনটি সঙ্গে এনেছিলেন কি না, তা-ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সার্বিক দিক মাথায় রেখে তদন্ত করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলটির ম্যানেজারকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমনের মুঠোফোনে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা নিহতের ফিঙ্গার প্রিন্ট যাচাই করে এনআইডি কার্ড অনুযায়ী তার পিতা আবু তাাহের, নাতুন মহল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ । হোটেল রেজিষ্টারে নাম হলো রেহেনা আক্তার, কিন্তু তার প্রকৃত নাম হলো নাসরিন আক্তার ।









Discussion about this post