পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ফটো সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রীতমকে মারধর করা কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, সমালোচিত বজলুর রহমান হাজী রিপন ও হারুন অর রশিদরা গ্রেপ্তার হয়নি এখনো।
সাংবাদিকেরা প্রতিনিয়ত মানববন্ধন বিক্ষোভ সহ প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়ে বার বার আবেদন করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি।
এদিকে প্রীতমকে দেখতে গেলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিম ওসামনের পুত্র আজমেরী ওসমান।
১৩ এপ্রিল সামবার সকালে প্রীতমকে দেখে আজমেরী ওসমান বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না। তারা দিন রাত পরিশ্রম করে সমাজের বিভিন্ন দুর্ভোগ ও অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে। একইসাথে মানুষের সাথে ঘটা নানা অন্যায় অত্যাচারের ঘটনাও তুলে ধরেন তারা। তাই সাংবাদিকদের সাথে এ ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।
এসময় সুস্থ্যতা কামনা করে সর্বাত্মক সহযোগীতা করাসহ সার্বক্ষণিক প্রীতমের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন আজমেরী ওসমান।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়শনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি শফিউদ্দিন বিটু, সিনিয়র সাংবাদিক মতিউর সেন্টু, সাংবাদিক সায়েম, রিপন মাহমুদ, প্রীতমের বড় ভাই মেহেদী রহমান নয়ন প্রমুখ।
উল্লেখ্য আগে ২৩ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের জেলা কারাগারের বিপরীত পাশে সস্তাপুর এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলা ও বেধরক মারধরের শিকার হন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ‘সংবাদচর্চা’র ফটো সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রীতম। এই ঘটনায় হামলার শিকার প্রীতম ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, জেলা ট্রাক ও ট্যাঙ্ক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাজী রিপন ও স্বপ্ননীড় হাউজিং লিমিটেডের মালিক হারুন অর রশীদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে ফটো সাংবাদিক প্রীতম উল্লেখ করেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে অবস্থিত জেলা কারাগারের বিপরীতে একটি জমির উপর নির্মিত দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর সংবাদ পান তিনি। বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে নিজের ‘নিকন ডি-৭০০’ মডেলের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলেন। ছবি তুলতে দেখে সন্ত্রাসীরা তার দিকে তেড়ে আসে। পরে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পরিবহন শ্রমিক নেতা হাজী রিপন তার হাতে থাকা স্টিলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। একই সময় কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান লোহার রড দিয়ে প্রীতমকে পেটান। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তিন নম্বর আসামি ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ এবং ৪০-৫০ জন হামলাকারী লোহার রড, লোহার পাইপ, কাঠ, বাঁশসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে ফটো সাংবাদিক প্রীতমকে বেধড়ক মারধর করেন। মারধরের শিকার প্রীতমের স্মার্টফোন, পকেটে থাকা টাকাসহ মানিব্যাগও ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
ফটো সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রীতম বলেন, হামলার এড়াতে দৌড়ে পাশের দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে চায়ের গরম কেটলি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়। মাথা, হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করা হয়েছে। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি বাড়িতে শয্যায় আছেন।
এমন হামলার ঘটনায় ফতুল্লা থানায় দায়েরকৃত মামলায় আসামী কাউন্সিলর শফি ও স্বপ্ননীড়ের কর্ণধার হারুন আদালতে জামিন নিতে গিয়েও আদালতের বিচারককে হুমকি দেয়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় । এমতাবস্থায় প্রয়াত সাংসদ পুত্র আজমীর ওসমান ফটো সাংবাদিক প্রিতম কে শান্তনা দিয়েঘটনা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।









Discussion about this post