নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
ক্রাইমজোনখ্যত ফতুল্লার কাশিপুর ভোলাইল এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ব্যবসায়ী শরীফকে পরিকল্পিত হত্যার ঘটনায় মাষ্টারমাইন্ডার মেম্বার শামীম, হারুন, দরবেশ ও জামানের নিয়ন্ত্রিত দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতারকৃত শাজাহান মিয়ার ছেলে ইসমাইল এবং খলিল মিয়ার ছেলে রাসেল হত্যাকান্ডের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাউসার আলমের খাস কামড়ায় পৃথকভাবে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এমন স্বীকারোক্তির বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লাথানার ইন্সপেক্টর তদন্ত সাহাদাত হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম নিশ্চিত করেছেন ।
শনিবার ৪ এপ্রিল বিকেল ৪ টা থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বিজ্ঞ বিচারক কাউসার আলম ব্যবসায়ী শরীফ হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তির সকল তথ্য লিপিবদ্ধ করে অন্যান্য আসামীদের সাাথে ইসমাইল ও রাসেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ সময় আদালত চত্তরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এই খুনের নেপথ্যের নায়ক যারা তাদের তারা এখনো বীরের বেশে চলাফেরা করছে আর ছিচকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে নানা নাটক মঞ্চস্থ্য করেছে পুলিশ । পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা এই হত্যাকান্ডের মাষ্টারমাইন্ডারদের রক্ষা করার মিশন সম্পন্ন করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে । এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কয়েকজন স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে শরীফ হত্যাকান্ডের নেপথ্যের মাষ্টারমাইন্ডার নানা কেলেংকারীর হোতা শাসক দলের কয়েকজন নেতাদের বিরুদ্ধে নানা কুকর্মের অসংখ্য ফিরিস্তি তুলে ধরেন । যার কিছু অংশের রেকর্ড সংরক্ষনে রয়েছে ।
এর আগে সদর উপজেলার দেওভোগ আদর্শনগর এলাকায় ব্যবসায়ী শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি ইসমাইল হোসেনসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা থানা পুলিশ।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। শনিবার দুপুরে আটক ওই নয়জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, পশ্চিম দেওভোগ রঙ্গিলা রোড এলাকার নূর মসজিদ সংলগ্ন শাজাহান মিয়ার ছেলে ইসমাইল (২০), একই এলাকার ইসমাইল হোসেনের বাড়াটিয়া শাজাহানের ছেলে রাসেল (২০), মুন্নার বাড়ির নিচতলার ভাড়াটিয়া নুর ইসলামের ছেলে ওসমান ওরফে জীবন (১৯), বাড়ৈভোগ মসজিদ সংলগ্ন সূর্য বেগমের ভাড়াটিয়া আতাউরের ছেলে সোহাগ (২০), দেওভোগ নূর মসজিদ সংলগ্ন আব্দুস সাত্তারের ছেলে রকি (১৮), একই এলাকার জালাল মোল্লার ভাড়াটিয়া খলিল মিয়ার ছেলে রাসেল (১৯), বাহ উদ্দিন মিয়ার ভাড়াটিয়া মুকুল মন্ডলের ছেলে মেহেদী হাসান (২২), ৬২নং আদর্শনগর এলাকার শাহাবুদ্দিনের ছেলে মিলন হোসেন (২৮) এবং ময়না কমিশনারের ভাড়াটিয়া তারা মিয়ার ছেলে কমল মিয়া (১৮)।
গত ১ এপ্রিল সকাল ১১টায় নিজ বাড়ির সামনেই কুপিয়ে হত্যা করা হয় শরীফ মাতবর নামে এক যুবককে। সে ওই এলাকায় আলাল মাতবরের ছেলে। বৃষ্টি ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচার নামে একটি দোকান ছিল তার। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার (তদন্ত) পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, এজাহারনামীয় ইসমাইল হোসেনকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যায় জড়িত থাকা আরও আট সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা হত্যায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। একই সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত রয়েছে সেসব নামও জানিয়েছে । তদন্তের স্বার্থে সেসব নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীসহ স্বীকারোক্তিতে পাওয়া হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিগগিরই তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মোঃ আসাদুজ্জমান পিপিএম বলেন, ফতুল্লা থানার ব্যবসাযী শরীফ হত্যা মামরায় দুইজন স্বীকারোক্তি প্রদানের পর তাদেরসহ মোট ৯ জনকে আদালতের আদেশ কারাগারের পাঠানো হয়েছে ।









Discussion about this post