নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের নারী নিয়ে রিসোর্ট কান্ডকে ঘিরে ফেসবুকের মাধ্যমে সরাসারি ভিডিও দেখে নারায়ণগঞ্জ শহর ও রূপগঞ্জ থেকে অসংখ্য হেফাজত কর্মী সমর্থকরা সোনারগাঁয়ে উপস্থিত হয়ে যে তান্ডব চালিয়েছে তার কিছু নির্ভরশীল কিছু তথ্য পাওয়া গেছে ।
এদের মধ্যে অন্যতম শহরের ডিআইটি মসজিদের ঈমাম ও জেলা হেফাজত ইসলামীর আমির মাওলানা আবদুল আউয়াল, সাধারণ সম্পাদক মুফতি বশিরউল্লাহ, সহ সভাপতি মাওলানা আবদুল কাদের, মাওলানা মফিজ, আবু তাহের, মাওলানা জাকির হোসেন কাসেমী, মাওলানা, মাওলানা মুফতি বেলাল হোসেন, মাওলানা মাহমুদ হাসান, মুফতি বদরুল আলম সিলেটি, মুফতি সিবলী নোমানী, মুফতি আবুল কাশেম, মাওলানা আবদুস সালাম, সোনারগাঁও উপজেলা খেলাফত মজলিশের সভাপতি ইকবাল হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা হেফাজতে ইসলামের আমির মহিউদ্দিন খান, সোনারগাঁও উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সেক্রেটারি শাহাজাহান ওরফে শিবলী, সোনারগাঁও উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেমসহ আরো অনেকেই মোবাইল ফোনে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মুহূর্তের মধ্যে যার যা অবস্থান থেকে সংগঠিত হয়ে সোনারগাঁয়ে তান্ডবে অংশ নেয়ার মূখ্য ভূমিকা পালন করেন।
শনিবার ৩ এপ্রিল বিকাল ৩ টায় সোনারগাঁ উপজেরার রয়াল রিসোর্টের ৫ম তালার ৫০১ নম্বর কক্ষে নারীসহ অবরুদ্ধ করার ঘটনায় ফেসবুকে লাইভ ভিডিও দেখে দ্রুত সোনারগাঁয়ে হেফাজত কর্মীদের সাথে নিয়ে উপস্থিত হয় উল্লখিত নেতাদের অনেকেই । এদের মধ্যে নারাযণগঞ্জ জেলা হেফাজতের আমির মাওলানা আবদুল আউয়াল নিজের মুঠোফোন ছাড়াও অন্যান্যদের মোবাইল ফোন দিয়ে সোনারগাঁ থেকে মামুনুল হককে উদ্ধারের নির্দেশ দেয় । যে কোন মূল্যে মাওলানা মামুনুল হককে নারীসহ উদ্ধার করতে হবে বলেও নির্দেশনা দেয় আউয়াল ।
এমন নির্দেশনা পেয়ে রূপগঞ্জের দীঘিবরাব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন দারুন কোরান জামিয়া মাদ্রাসা থেকে কমপক্ষে ৩০/৪০ জন মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে সোনারগাঁয়ে তান্ডবে অংশ নেয় হেফাজত নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী বদরুল আলম সিলেটি ।
মুফতী বদরুল আলম সিলেটি ৫ জানুয়ারীর মতিঝিল শাপলা চত্তরের তান্ডব, পরের দিন (৬ জানুয়ারী) সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে তান্ডব, হেফাজতের প্রতিটি হরতাল সভা সমাবেশে সক্রিয় অবস্থান, গত ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জে ও রূপগঞ্জে জোড়ালো অবস্থন ও সবশেষ সোনারগাঁয়ে মামুনুল কান্ডে ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে বীরদর্পে রূপগঞ্জে ঘোষনা দেয়ায় ফুসে উটেছে এলাকার সাধারণ লোকজন ।
অনেকেই বলেন এই মুফতী বদরুল আলম সিলেটির কোন অর্থ সম্পদ না থাকলেও বর্তমানে রূপগঞ্জের দীঘিবরাব এলাকায় বিশাল সম্পত্তি ক্রয় করে এলাকার নাম পরিবর্তন করে ওলামা নগর হিসেবে নিজের নাম প্রতিষ্টা করেছেন । কোথা থেকে এমন অর্থ বিত্ত তার উত্তর না জানলেও মুফতী বদরুল আলম সিলেটির হুংকারে সকলেই ভীত হয়ে থাকে এলাকায় ।
রূপগঞ্জে তারাব পৌরসভার দিঘীবরাব এলাকার মুফতী বদরুল আলম সিলেটি অত্যান্ত ঘনিষ্ট সূত্র ও এলাকার অনেকের সাথে আলোচনা করে আরো জানা যায়, সোনারগাঁয়ের রিসোর্টকান্ডে নারীসহ অবরুদ্ধ মামুনুল হককে উদ্ধার করতে ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে ফের রাতের ১০টার মধ্যে নিজ মাদ্রাসায় ফিরে অনেকের সাথে মুঠোফোনে আলোচনা করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। এবং পরবর্তীতে আর কি করতে হবে সেই নির্দেশনা আদান প্রদান করেন মুফতী বদরুল আলম সিলেটি ।
নারায়ণগঞ্জ হেফাজতের একনিষ্ট কর্মীদের কেউ কেউ গত কয়েকদিন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, মূলতঃ সোনারগাঁ থেকে মামুনুল হকের বিষয়ে ৩ এপ্রিল শনিবার সোনারগাঁ থেকে কি করবেন এমন নির্দেশনা চেয়ে জেলা হেফাজত সভাপতি মাওলানা আবদুল আউয়ালের কাছে ফোন করেন । ফোনে অনেকেই জেলা হেফাজত ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি বশির উল্লাহর কাছেও নির্দেশনা চাইলে সোনারগাঁ থেকে যে কোন মূল্যে মামুনুল হককে উদ্ধারের আদেশ দেন । এমন আদেশে আদিষ্ট হয়ে সোনারগাঁয়ে তান্ডব চালিয়ে নারীসহ উদ্ধার করে মামুনুল হককে ।
নারীসহ সোনারগাঁয়ের রিসোর্ট থেকে মামুনুল হককে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা ।
সোনারগায়ে এমন তান্ডব ছাড়াও ৫ দিন পূর্বে হেফাজত ইসলামীর হরতালে একই কায়দায় মুঠোফোনে নির্দেশনা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ ও রূপগঞ্জে তান্ডব চালায় হেপাজতের নেতাকর্মীরা ।
হরতালে ব্যাপক তান্ডবের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জে ৭টি, রূপগঞ্জে ১ টি ছাড়াও সোনারগাঁয়ে মামুনুল হকের নারী নিয়ে রিসোর্ট কান্ডে আরো ৮ টি মামলা দায়ের হলে উভয় মামলায় এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক হেফাজত নেতকর্মীদের গ্রেফতার করা হলেও অনেকেই রয়েছেন আড়ালে । গ্রেফতার এড়াতে নানাভাবে অনেক হেফাজত নেতা লবিং চালিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছে । কোন কোন হেফাজত নেতা শীর্ষ জনপ্রতিনিধিদের ব্যবহার করছেন নানাভাবে ।
এমন তদ্বিরের ঘটনায় হেফাজতের ঘৃণ্য কর্মকান্ডের নিন্দা প্রকাশ করে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, হেফাজতের উল্লিখিত নেতাদের মুঠোফোনের কল রেকর্ড যাচাই বাছাই করলেই রেড়িয়ে আসবে হরতার ও মামুনুল হকের নারী কান্ডে তান্ডবের ঘটনায় কে কি ভেূমিকা পালন করেছে । একই সাথে হেফাজতের উল্লেথিত নেতা বিশাল সম্পদের উৎস যাচাই করলেই বেড়িয়ে আসবে নারায়ণগঞ্জে এমন তান্ডবের নেপথ্যে কারা অর্থায়ন করছে ।








Discussion about this post