নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জের সকল গণমাধ্যম ছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে ফলাও করে প্রচার হয় কুতুবপুর দরবার শরীফের পীর জাকির শাহের বিরুদ্ধে দায়ের করা কোটি কোটি টাকার প্রতারণা মামলায় আদালত কর্তৃক ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে ।
আর এই প্রতারণার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামী জাকির শাহের আপন ভাইকে সাক্ষী করা হয়েছে । এমন খবরে তোলপাড়ের পর তড়িঘড়ি করে সমাঝোতার ব্যবস্থা করে জাকির শাহ ও মামলার বাদী জাপান প্রবাসী ফজর আলী। এমন সমাঝোতাকে রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছে উপস্থিত অনেকেই ।
এমন সমাঝোতার ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে গণমাধ্যমকর্মীদের নানাভাবে অনুরোধ করেছে ফজর আলী ও প্রতারণা মামলার ওয়ারেন্ট ভূক্ত আসামী জাকির শাহ ।
বুধবার ২৯ জানুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বন্দর কুতুবাগ দরবার শরিফে মামলার সাক্ষী ও অন্যান্যদের উপস্থিতিতে পীর জাকির শাহের কাছে ক্ষমা চায় মামলার বাদী জাপান প্রবাসী ফজর আলী ।
এ সময় ফজর আলীকে বিমর্ষ দেখা গেলেও উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ আমার পীর । ভূল বোঝাবুঝির কারনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানার যে সংবাদটি গত ২৮জানুয়ারী বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তার জন্যও আমি ক্ষমা প্রার্থী।
ফজর আলী গণমাধ্যমকর্মীদের আরো জানায়, কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহের সাথে পারিবারিক সুসম্পর্ক রয়েছে। আমি যা করেছি সেজন্য লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী ।
এমন প্রতারণা মামলার পর পীর জাকির শাহের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের একদিনের মধ্যে সমাঝোতার ঘটনায় কঠোর সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দরজুড়ে।
অনেকেই বলেছেন ঘটনার পেছনে অনেক রহস্য লুকিয়ে রয়েছে । যা এখন ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে আসল ঘটনা বেড়িয়ে আসতেও পারে আবার হুমকি ধামকিতে চিরতরে থেমেও যেতে পারে বাদী ফজর আলী
মামলার বিবরণে জানা যায়, যৌথ ব্যবসা করার জন্য কুতুব বাগের পীর জাকির শাহ ব্যবসায়ী ফজর আলীকে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী ব্যবসার উদ্দেশে ৮ কোটি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তাই ফজর আলীর কাছ থেকে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা এবং ৬টি চেক গ্রহণ করেন । অঙ্গীকারনামা ও চেকের বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রদান করেন পীর জাকির শাহ। পরবর্তীকালে আর টাকা দিতে পারবে না বলে জানালে ফজর আলী টাকা ফেরত দেয়। ওই সময় স্ট্যাম্প ও ৩টি চেক ফেরত দিলেও বাকি ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানান পীর জাকির শাহ। ওই সময়ে স্ট্যাম্পের পেছনে চেক নম্বর উল্লেখ করে হারানো ৩টি চেক বাবদ কোনো দাবি-দাওয়া নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেন এবং পরবর্তীকালে খুঁজে পেলে ফেরত দিবেন বলে অঙ্গীকার করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর ব্যবসায়ী ফজর আলী জানতে পারেন ওই চেক হারানো যায়নি এবং এগুলো নিয়ে পীর জাকির শাহ টাকা দাবি করার ষড়যন্ত্র করছেন। এক পর্যায়ে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে পীর জাকির শাহ এবং সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুকে খাওয়ানোর পর চেক ফেরতের বিষয়ে কথা বললে পীর জাকির শাহ ও সহযোগী বাবু ৫ কোটি টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় চলতি বছরের ৭ জানুয়ারী ব্যবসায়ী ফজর আলী বাদী হয়ে কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ ও তার সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুর বিরোদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক অঞ্চল) আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
আদালতে অভিযোগ দায়েরের পর পরই ৭ জানুয়ারী আদালত জাকির শাহের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে ।
আদালত কর্তৃক ইস্যুকৃত গ্রেফতারী পরোয়ানার বিষয়ে এতোদিনেও আসামীর বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে বন্দর জুড়ে ।









Discussion about this post