ইংবেজী নব বর্ষের শুরুতেই নারায়ণগঞ্জের সর্বত্রব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে এক কুক্ষাত রাজাকার গোলাম রাব্বানী খানের পরিবারের অন্যতম সদস্য যিনি নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র অঙ্গুলি নাচিয়ে রেড়ান সেই খালেদা হায়দার খান কাজলকে নিয়ে । একদিকে নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রকাশ্য জনসভায় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ধিক্কার দিয়েছেন এই রাজাকার পুত্রের কারণে । অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে চেলাচল করা উৎসব পরিবহন লিমিটেডের চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন তার একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এই খালেদ হায়দার কাজল । এই কাজল ও তার পরিবারকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা ! যা টক অব দ্যা টাউন
এনএনইউ ডেক্স :
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদা হায়দার খান কাজলের পিতা ছিলেন একজন রাজাকার। এই তথ্য জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গবেষক মুনতাসির মামুন। তিনি তার অনুসন্ধানি বইয়ে জানিয়েছেন, গোলাম রাব্বানী খান ছিলেন শান্তি কমিটির চাষাড়া ইউনিট কমান্ড (ইউসি)।
গেল বছরের শেষের দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, রাজাকার বংশধরদের যেন কেউ প্রতিষ্ঠিত না করে। এ ব্যাপারে তিনি হুঁশিয়ারীও উচ্চারণ করেছিলেন। তারপরও নারায়ণগঞ্জে প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে রাজাকার বংশদরদের অনেকেই। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খালেদ হায়দার খান কাজল।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, কুখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানী খানের ছেলে খালেদ হায়দার খান কাজল কীভাবে চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হয়? কারা তাকে প্রতিষ্ঠিত করছে ?
সর্বশেষ ১ জানুয়ারি মেয়র আইভী রাজাকারপুত্র কাজলকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার কারণে সাংসদ সেলিম ওসমানকে ধিক্কার জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মজিব বর্ষ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
এদিকে উৎসব পরিবহন লিমিটেডের চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন। অথচ তার নিয়ন্ত্রণাধিন এই উৎসব পরিবহনের নতুন বাস সার্ভিস উদ্বোধন তিনি করিয়েছেন চিহ্নিত সেই রাজাকার গোলাম রাব্বানী খানের ছেলে খালেদ হায়দার খান কাজলকে দিয়ে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টায় নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ফিতা কেটে ওই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন কাজল। এরপরই এ নিয়ে সর্বত্র শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। প্রশ্ন উঠে একজন মুক্তিযোদ্ধার নিয়ন্ত্রণাধিন প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে কীভাবে একজন রাজাকারপুত্র প্রধান অতিথি হয় ?
এদিকে এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশকে হানাদারমুক্ত করে স্বাধীন করেছিলেন, সেই মুক্তিযোদ্ধারা মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন রাজাকার ও তাদের উত্তরসূরিদের । কিন্তু উৎসব পরিবহনের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহর ক্ষেত্রে বিষয়টি পুরোপুরিই ঘটেছে উল্টো । যদিও তার দাবি, ‘কাজলকে তার ভালো লাগে !’
খালেদ হায়দার খান কাজলের পিতা একজন রাজাকার ছিলেন সেটি তিনি নিজেও জানেন স্বীকার করে শহীদুল্লাহ বলেন, “আমি চেষ্টা করেছিলাম দুই এমপিকে দিয়ে উদ্বোধন করাতে। কিন্তু তাদের আনা সম্ভব হয়নি তাই খালেদ হায়দার খান কাজলকে দিয়েই উদ্বোধন করানো হয়েছে ।”
একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও একজন রাজাকারের ছেলেকে কীভাবে প্রধান অতিথি করেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রথম তিনি বলেন, “আমি সেভাবে বুঝে উঠতে পারিনি।” পরবর্তীতে শহীদুল্লাহ বলেন, “আমার ভালো লেগেছে তাই তাকে (কাজল) প্রধান অতিথি করেছি। কাজলকে আমার ভালো লাগে।” (সূত্র নারায়ণগঞ্জ টুডে)









Discussion about this post