নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৫ দিন ঘুরেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ধর্ষক ইব্রাহিম মিয়া ও তার পরিবারের হামলা থেকে বাঁচতে রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবে কাফনের কাপড় পরে আশ্রয় চেয়েছে ধর্ষিতার পরিবার।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাব কার্যালয়ের সামনে ধর্ষিতা ও তার পরিবার কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বর্তমানে ধর্ষক ও তার পরিবারের হুমকি-ধামকির কারণে তারা ঘরছাড়া।
ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ, তাদের বাড়ি উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার দক্ষিণ কেরাব এলাকায়। গত ২০ এপ্রিল ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একই এলাকার কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ধর্ষক ইব্রাহিম ও তার বাবা কবির হোসেনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মামলা নেননি। এমনকি ধর্ষকের পরিবার সন্ত্রাসী দিয়ে ধর্ষিতা ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছে। এ নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ঘরছাড়া ধর্ষিতা ও তার পরিবার।
ধর্ষিতার পরিবার আরও জানায়, ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি মাদরাসার অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপাড়া করে। গত দেড় বছর আগে উপজেলার দক্ষিণ কেরাব এলাকার কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়া বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক বছর ধরে ইব্রাহিম মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত শারীরিক সম্পর্ক করতেন।
বেশ কিছুদিন ধরে ওই শিক্ষার্থী তাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ইব্রাহিম মিয়া বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। ওই শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তাকে হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। পরে ১৯ এপ্রিল রাতে ইব্রাহিম মিয়া শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির পাশে দেখা করতে বলেন। ওই শিক্ষার্থী কথামতো বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে দেখা করতে গেলে ইব্রাহিম মিয়া তাকে ধর্ষণ করেন। ওইদিন রাতে ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন বিষয়টি ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন ও মা লিপি বেগমকে জানালে তারা ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
ধর্ষিতার চাচা জানান, রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির পর বাড়িতে যাওয়ার সময় তাদের আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আশঙ্কা করছেন ধর্ষকের বাবা কবির হোসেনের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
এমন ঘটনার বিষয়ে কাঞ্চন পৌরসভার কেরাবো এলাকার অনেকে জানান, এই বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা শালিসি বৈঠকে মীমাংসা করতে স্থানীয় গাম্য টাউট আলামিন, আশ্রাফুল ও ওমর কাজী মিলিত হয়ে কাউন্সিলর জামালের নেতৃত্বে ২ লাখ টাকায় আপোষ মীমাংসা করে । ২ লাখ টাকার মধ্যে এক লাখ টাকা টাউট পক্ষ আর এক লাখ টাকা ভিকটিমের পরিবারকে দেয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে টালবাহানা করতে থাকে আলামিন, আশ্রাফুল ও ওমন কাজী । বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে প্রেসক্লাবের সামনে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ করে ধর্ষিতার পরিবার ।
এই ঘটনার বিষয়ে কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, এমন মীমাংসার বিষয়টি আমার জানা ছিলো । উভয় পক্ষ বিয়ের মাধ্যমে সমাঝোতার জন্য রাজি ছিলো । আমিও বলে দিয়েছিলাম কোনভাবেই যেন অনৈতিক কিছু না ঘটে । টাকার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না।
এ ব্যাপারে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আজ মামলা হয়েছে।









Discussion about this post