সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মতদ ত্বকী হত্যার ৯৭ মাস উপলক্ষে ত্বকী, শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবিতে নিহত ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে নিহতদের স্মরণে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের এই আয়োজনে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সন্ধ্যায় এ কর্মসূচিতে প্রায় দুই শতাধিক সাংস্কৃতি, রাজনীতি ও সমাজ কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচি উপলক্ষে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, ‘দেশে বিচার-ব্যবস্থা স্বাধীন হলে একটি হত্যার বিচারের অভিযোগ তৈরি হয়েও তা আট বছর আটকে থাকে না। ৩৪ জনের মৃত্যুর পাঁচদিন পার হলেও শীতলক্ষ্যায় লঞ্চটিকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয়া কার্গোটির মালিককে বিচারের আওতায় আনতে পারে না। ত্বকীর ঘাতকরা যেহেতু সরকার দলীয় সেহেতু ত্বকী হত্যার বিচার যেমনি বন্ধ করে রাখা হয়েছে, তেমনি ঘাতক কার্গোটিও যেহেতু সরকারের একান্ত আপনজনের সেহেতু কার্গোটির মালিককেও এখন আর বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না। আমরা এ গণবিরোধী বিচার-ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ফিরে পেতে চাই। যেখানে সকলের বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে, কথা বলার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। সংবাদপত্র, নির্বাচন-ব্যবস্থা, বিচার-ব্যবস্থার স্বাধীনতা সহ দেশের প্রতিটি নাগরিক সংবিধানে উল্লেখিত অধিকার পাবে। আমরা সাগর-রুনি, তনুসহ নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, মিঠু, বুলু হত্যার বিচার চাই। দেশে ও বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, তাদের প্ররিবারের প্রতি জানাই সমবেদনা।’
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে হত্যা করে ঘাতকরা লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দিলে এর দুইদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আমরা ত্বকীর লাশ উদ্ধার করি। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখে আমরা নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছি। সরকারের বৈষম্যমূলক বিচার ব্যবস্থার কারণে দীর্ঘ আট বছরেও এ হত্যার বিচার হয়নি। আজকে আমরা ত্বকী হত্যার ৯৭ মাস উপলক্ষে ত্বকী, শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবিতে নিহত ৩৪ জন সহ সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিহতদের স্মরণ করছি।
করোনা বিপর্যয়ের বাস্তবতায় নিজ নিজ অবস্থানে থেকে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, অ্যাড. প্রদীপ ঘোষ বাবু, সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, খেলাঘর নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, উদীচী জেলা সভাপতি জাহিদুল হক দীপু, সাধারণ সম্পাদক পলাশ দে, সমগীতের সভাপতি অমল আকাশ, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজনসহ প্রায় দুইশ’ সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মী।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।









Discussion about this post