“শামীম ওসমানের পায়ে হাঁটার মতো অবস্থা তৈমুর আলম খন্দকারের হয় নাই। নির্বাচনে শামীম ওসমান বা কারোর প্রয়োজন তার হবে না। আমি প্রথম দিন থেকেই বলছি, শামীম ওসমানের পায়ে তৈমুর আলম খন্দকার হাঁটে না। গত ৫০ বছর ধরে মাটি ও মানুষের সাথে রাজনীতি করতে করতে তৈমুর আলমের ভিত্তি এতটাই শক্ত অবস্থান হয়েছে যে, কোনো শামীম ওসমান বা সেলিম ওসমানের হয়ে আমাকে নির্বাচনে অভিনয়ে নামতে হবে না।”’
এবাবেই রোববার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর মাসদাইরে নিজ বাড়িতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তৈমুর আলম খন্দকার।
গত শনিবার আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী অভিযোগ করেন, তৈমুর আলম খন্দকার আওয়ামী লীগের সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমানের প্রার্থী। তার ভাই জাতীয় পার্টির সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমানও তৈমুরের পক্ষে আছেন বলে অভিযোগ আইভীর।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তৈমুর আলম খন্দকার।
তিনি বলেন, তার প্রার্থীতার সাথে ওসমান পরিবারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গ পরিষ্কার করতেই এই সংবাদ সম্মেলন। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে যাওয়ার পূর্বে ৮ পৃষ্ঠার একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। ওই বক্তব্যে শেষাংশে তৈমুর আলম বলেন, ‘সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করেছেন।
তবে এমন অভিযোগ ওঠার কারণ জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেননি। ‘শামীম ওসমান তাকে সমর্থন দিচ্ছেন এমন আলোচনা সাধারণ জনগণ কীভাবে নিচ্ছেন’ জানতে চাইলে তৈমুর বলেন, সাধারণ জনগণ মনে করতেছে যে, আমার দল বিএনপি ঐক্যবদ্ধ এবং সরকারি দল দ্বিধা-বিভক্ত। আমার কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।
তাহলে বিএনপি কি নির্বাচনে ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি তো জনগণের বাইরে না। বিএনপিও তো ট্যাক্স দেয়। বিএনপি যারা করে তারাও এই নগরীর নাগরিক। আমার সাথে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এখনও বসে আছেন।’ অসুস্থতা ও মামলাজনিত কারণে অনেক বিএনপি নেতা তার পক্ষে সরাসরি নামতে পারছেন না বলেও দাবি করেন তৈমুর। নিজেকে জনগণের প্রার্থী দাবি করে তৈমুর বলেন, ‘আমি জনগণের প্রার্থী এবং বিএনপি এইটার অংশীদার।’
বিএনপি পক্ষে থাকলে তিনটি দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পেলেন কেন ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটা রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। এটাও কৌশল হতে পারে। বিএনপি তো জনতারই অংশ। জনতার চাহিদার বাইরে যাবে না।’ তাহলে হাইকমান্ডের নির্দেশ কী ? এই প্রশ্নের জবাবে তৈমুর বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব হলেন দলের মুখপাত্র। আমি কী বললাম বা অমুক কী বললো সেটা বিবেচ্য না। মহাসচিব বলেছেন, দলগতভাবে বিএনপি নির্বাচন করবে না। তবে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে করতে পারে। এ ব্যাপারে বিএনপির আপত্তি নাই।’
এদিকে গত শুক্রবার তৈমুর আলমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ জাতীয় পার্টির চার ইউপি চেয়ারম্যানকে দেখা গেছে। তারা কেউই সিটি কর্পোরেশনের ভোটারও নন। অভিযোগ রয়েছে, শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমানের নির্দেশে ওই চার চেয়ারম্যান তৈমুরের প্রচারণায় ছিলেন। এই প্রসঙ্গে তৈমুর আলম বলেন, ‘তারা সিটির ভোটার না হলেও এই সিটির ভোটারদের সাথে তাদের সম্পর্ক বিদ্যমান। তারা এই সিটির নাগরিকদের সুখ-দুঃখের সাথে জড়িত। এই কারণে তারা ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন দিয়েছেন।’ আপনি সমর্থন চেয়েছিলেন নাকি ব্যক্তিগত সদিচ্ছায় তারা প্রচারণায় এলেন? এই প্রশ্নের জবাবে তৈমুর বলেন, ‘আমি তো দল-মত নির্বিশেষে সকলের সমর্থন চাই। কাদের ঘনিষ্ঠ সেটা বিষয় না আমার কাছে তো তাদের পরিচয় তারা জনপ্রতিনিধি।’
তৈমুর আলমের সাথে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা জামাল উদ্দিন কালু, সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, হাজী ফারুক হোসেন, হাজী নুরুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল হোসেনসহ এরা কয়েকজন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তৈমুর আলম সরকারি দলের মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও তোলেন। এছাড়া গত দুই মেয়াদে সরকারি দলের মেয়র ‘জনগণকে দুর্ভোগ ছাড়া কিছুই দিতে পারেননি’ বলেও মন্তব্য করেন। তার সমর্থকদের পুলিশ হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ করেন তৈমুর।
তৈমুর আলমের সাথে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা জামাল উদ্দিন কালু, সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, হাজী ফারুক হোসেন, হাজী নুরুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল হোসেনসহ এরা কয়েকজন।









Discussion about this post