প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে ১১ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে আটক করা হয়েছে ।এমন চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করা হলেও ফতুল্লার সাইনবোর্ডে করোনা সংকটেও থেমে নেই নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের চাঁদাবাজি।
যেখানে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে সারদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে সেনা, র্যাব, পুলিশ ও সিভিল প্রশাসন ব্যস্তসময় পার করছে তখনও সাইনবোর্ডে বাসস্ট্যান্ড, সড়কের পাশে সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা হোটেল ও ছোটখাটো চায়ের দোকান থেকে চলছে চাঁদা আদায়। প্রকাশ্যে সাইনবোর্ডে চাঁদাবাজি চললেও প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
এছাড়া লিংক রোড দখল করে শতাধিক দোকান ঘর তৈরি করে প্রত্যেকটি দোকান থেকে অগ্রিম ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে ভাড়া দিয়েছেন।
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঢাকার জেলার পরেই সবচেয়ে বেশি আতংক নারায়ণগঞ্জ জেলাতে। যেখানে সাধারন মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। আর অপরদিকে নাজিম উদ্দিন ও তার কয়েক অনুসারী লিপ্ত রয়েছে চাঁদাবাজিতে।
এক সপ্তাহ হলো সরকার লকডাউন শিথিল করেছে। এই করোনার দুযোর্গের মধ্যেই পুরোদমে শুরু করেছে ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের অনুসারীদের চাঁদাবাজি। বিষয়টিতে প্রশাসানের নজর না থাকায় চাঁদা আদায় বন্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।
এই সাইনবোর্ডে এলাকায় চাঁদাবাজিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের অনুসারী রাসেল সাউদ, জাকির, নুরুল আমিন।অত্যন্ত প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানের আস্থাভাজন বহু বিতর্কে বিতর্কীত এই নাজিম উদ্দিন। তিনি কখনো চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা, কখনো নারী ঘটিত স্ক্যান্ডাল আবার কখনো তিনি খবরের শিরোনাম হয়ে থাকেন সব সময়।
সাইনবোর্ডে বাসস্ট্যান্ডের সড়কে এক তাল বিক্রেতা অভিযোগ করেন, এতদিন ঘড়ে বসে ছিলাম সরকারের দেওয়া নির্দেশ মেনে।লকডাউন শিথিলের পর রাস্তায় নেমেছি তাল বিক্রি করতে।কিন্তু রাস্তায় দাড়িয়ে তাল বিক্রি করলেও টাকা দিতে হয় । আজব এক দেশ আমাদের।করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যেখানে সেনাবাহিনী, র্যাব পুলিশ ও সিভিল প্রশাসন ব্যস্ত সময় পার করছে তখনও চাঁদাবাজদের চলছে চাঁদা আদায়ের মহোৎসব । এরা এতোটাই বেপরোয়া যে পুলিশকেও ভয় পায় না।
চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে জেলার কোনো স্থানে চাঁদাবাজি হয়না। শুধুমাত্র ফতুল্লার সাইনবোর্ডে এলাকায় চাঁদা দিতে হয় ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা। চাঁদা না দিলে বিক্রিতো দূরের কথা রাস্তায় দাড়াতেই দিবেনা ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে এক শরবত বিক্রেতা বলেন, আমি রাস্তায় দাড়িয়ে শরবত বিক্রি করি। রাস্তায় দাড়িয়ে শরবত বিক্রি করলেও চাঁদা দিতে হয় ৫০ টাকা চাঁদা না দিলে রাস্তায় দাড়িয়ে বিক্রি করতে দিবেনা । তাই তাদেরকে চাঁদা দিয়ে শরবত বিক্রি করছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাইনবোর্ডে বাসস্ট্যান্ড, সড়কের পাশে সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা হোটেল ও ছোটখাটো চায়ের দোকান থেকে অবৈধ ভাবে চাঁদা আদায় করছে ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের অনুসারী রাসেল সাউদ, জাকির, নুরুল আমিন।প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে আবারো নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার গণমাধ্যমকর্মীরা ফোন করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি ।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)নাহিদা বারিক বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টা জানা নেই । তবে যারা চাঁদা আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রকাশ্যে এমন চাঁদাবাজির ঘটনার পর সড়কে রাত দিন কাজ করা ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেহ উদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার ( ১১ জুন ) দুপুরে জানান, গত সাত দিনে আইজিপির নির্দেশে পুরো জেলায় সড়ক ও মহাসড়কে সব ধরনের চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১১ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে আটক করা হয়েছে ।
সড়কে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি চলবে না । চাঁদাবাজির ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না । চাঁদাবাজদের চাষাঢ়া, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, তারাব ও ভুলতা পয়েন্ট থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় চাঁদাবাজির নিয়মিত মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে । আটকদের মধ্যে বৃহস্পতিবার সাইনবোর্ড থেকে চাঁদাবাজ নানু মিয়াকে (৩০) আটক করা হয়। তিনি শনিরআখড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে।









Discussion about this post