নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ থেকে শিশু সাদমান সাকি অপহরনের সাথে জড়িত থাকায় পুলিশ প্রথমেই গ্রেফতার করেছিলো এপনের আপন ভাই সাদিমকে । সাদিম তার মুঠোফোনের মাধ্যমে অজ্ঞাত অপহরণকারী পরিচয় দিয়ে এপনের শিশু পুত্র সাদমান সাকিকে অপহরণ করেছে বলে মুক্তিপন দাবী করে ৫ লাখ টাকা । এক পর্যায়ে শিশু সাকির খাবারের খরচা বাবদ সাড়ে ৪ হাজার টাকাও বিকাশে পাঠানোর পর তা উত্তোলন করে সাকির চাচা সাদিম । এমন ঘটনায় পুলিশ সাদিমসহ নিকটাত্মীয় কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর মামলার বাদী সৈয়দ ওমর খালেদ এপন নিজেই থানায় হাজির হয়ে ভাই সাদিমকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল ।
এমন তথ্য উপস্থাপন করে শিশু সাদমান সাকির পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদঘাটন হউক এমন দাবী করে সংবাদ সম্মেলেন করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল । সংবাদ সম্মেলনে দারোগা শামীম হোসেনের বক্তব্যের রেকর্ড উপস্থাপন করা হয় । সাংবাদিকদের মাঝে রেকর্ড করা সিডি উপস্থাপন করে সঠিক তদন্তের দাবী করা হয় সংবাদ সম্মেলনে ।
সোমবার ১৮ মার্চ বিকেল সাড়ে তিনটায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল আলম সজল শিশু সাদমান সাকিকে উদ্ধার ও প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে পুলিশের প্রতি আহবান জানান ।
বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি ও নাসিক কাউন্সিলর সজল তার লিখিত বক্তেব্যে আরো বলেন, গত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর সাদমান সাকি নিখোঁজের পর তাঁর বাবা এপন সদর মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর দারোগা শামীম হোসেন তদন্ত করেন। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কর্মকর্তা মো.আশরাফুল আলমও তদন্ত করেন। পিবিআই জিল্লুর রহমান, সোহেল আহম্মেদ অররাও ও আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করে। মামলার শুরু থেকেই এপন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে আসছে এবং বর্তমানে চক্রান্তকারীদের ফাদে পা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টাও করছে । তার ভাই বিকাশে টাকা নেয়া ও মুক্তিপন দাবীর পরও কেন তাকে ছাড়াতে এপন নিজেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তদ্বির করেছিলো ? মুক্তিপন চেয়েছিলো কে ? বিকাশে টাকা নিয়েছিলো কে ? সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নও ছুড়ে দেন সজল ।
একটি চক্র এপনের নিস্পাপ শিশুকে নিয়ে আবার নতুন করে রাজনৈতিক রং দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । নারায়ণগঞ্জে একটা কুকুর মারা গেলেও ওসমান পরিবারকে দায়ী করা হয়। সাকী নিখোঁজ সমস্ত অভিযোগের আঙুল একই দিকে। আমি এক নেতার আদর্শে বিশ্বাস করতেই পারি। আমার রাজনীতিতে কোন উগ্রবাদ নেই। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে এ ধরণের বক্তব্য দিয়ে উস্কে দিচ্ছে। এপনকে কেউ উল্টোপাল্টা শিখিয়ে দিচ্ছে আর সেই তাই বলছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন নাজমুল আলম সজল।
সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর সজল আরো জানান, নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোয় আমি (সজল) সাদমান সাকিকে অপহরণ করেছি। আমি এপনের এসব অবান্তর অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এপনের সাথে তাঁর কোন শত্রুতা নেই। সাকির অপহরণের সাথে যদি তাকে জড়িত সন্দেহ করা হতো তবে মামলার প্রথমেই আমার নাম অন্তর্ভূক্ত করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটি তো হয়ই-নি উল্টো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর আমার নাম জড়ানো হচ্ছে । কোন কোন পক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে শিশু সাদমান সাফি অপহরণ মামলায় নানাভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চিহ্নিত চক্র কাজ করে যাচ্ছে ।
২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর দুপুরে দেওভোগ এলাকা থেকে অপহৃত হয় সৈয়দ ওমর ফারুক এপনের ছেলে সাদমান সাকি। ঘটনার এতো দিন পরও সাকিকে উদ্ধার করতে পারে নাই প্রশাসন । এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম হোসেন একাধিকবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, শিশু সাদমান সাকি নিখোজ থাকার বিষয়টি রহস্যে ঘেরা । থানায় মামলা দায়েরের পর শিশুর বাবা নিকটাত্মীয় স্বজনদের কে আটক করায় । আবার নিজেই ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেছে । পুলিশও শিশুটিকে উদ্ধার করতে অনেককেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় । এরপর মোবাইল ফোনে টাকা চেয়ে শিশুটিকে ফিরিয়ে দিবে বলে মুক্তিপন দাবী করে। শিশু সাদমান সাকিকে মুক্তিপনের ৫ লাখ টাকা ম্যানেজ করার সময় দিয়ে তার খাবার বাবদ টাকা চায় অজ্ঞাত অপহৃতরা । আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে বিকাশের দোকানীকে আটকের পর তার দেয়া তথ্য মতে আটক করা হয় অপহরণের মূল হোতা সৈয়দ ওমর ফারুক এপনের ভাই সৈয়দ সাদিম আহমেদকে । দুই দিন আটক করে জ্ঞিাসাবাদের এক পর্যায়ে এপন নিজেই তার ভাইকে ছাড়াতে তৎকালীন পুলিশ সুপার মইনুল হোসেন ও থানার কারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন শাহ পারভেজের নিকট নানাভাবে তদ্বির করে থানা থেকেই এপন নিজেই ছাড়িয়ে নেয় ভাই ভাই সৈয়দ সাদিম আহমেদকে ।









Discussion about this post