নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে আধিপত্য বিস্তার ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে চাঁদা আদায়ের সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির শেল্টারে বেপরোয়া হয়ে উঠা পানি আক্তার ও আশরাফ উদ্দিন বাহিনীর ৫ চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) ইপিজেডের কদমতলী কাঠের পুল এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির নগদ অর্থ উদ্ধার করে র্যাব। তবে ডিএনডি সেচ খালে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরিয়ে পালিয়ে যায় চাঁদাবাজদের দল নেতা সন্ত্রাসী পানি আক্তার।
গ্রেফতারকৃতরা হলো :- হৃদয় মিয়া (২৫), বাবু (৩০), নূও হোসেন(২৩), মো: হাসান (২১), রাসেল (৩০)। পানি আক্তারসহ পালিয়ে গেছে আল আমিন (২৫), মহিন (২৪), আরিফুল ইসলাম (২৫), জীবন (২৫), রাফি (২৪), হৃদয় (২৬) ও রবিউল আলম (২৬)।
এ বিষয়ে র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট ইপিজেডে যাতায়াতকারী বিভিন্ন পণ্য পরিবহন ও ব্যবসায়ীদেরকে জিম্মি করে চাঁদাবাজী করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে একটি চাঁদাবাজ বাহিনী ইপিজেডের গেইটের সামনে অবস্থান নিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যরা পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেছে।
র্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, তারা স্থানীয় কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও তেল চোরদের গডফাদতার আশরাফের ঘনিষ্ট সহযোগী। তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের রফতানিমুখী পণ্য পরিবহনসহ সর্বত্র চাঁদাবাজি করে আসছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত সাইফুল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির মামলা করে র্যাব ৫ জনকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তারা সবাই মামলার এজাহার নামীয় আসামি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী এক কুখ্যাত অপরাধীর শেল্টারে সিদ্ধিরগঞ্জে তেলচুরির মহোৎসব, ইপিজেড এর সকল অপরাধ কর্মকান্ডসহ ভুমদস্যূতা, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ সকল ধরণের অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কাউন্সিলর মতি, তেল চোর আশরাফ, সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের একাধিক সক্রিয় সদস্য । এই চক্রের হোতা মতি, আশরাফ ও সিরাজ মন্ডল সরাসরি নিয়মিত আইনশৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে মোটা অংকের মাসোয়ারা প্রদান করে আসছে। এ ছাড়াও স্থানীয় থানা পুলিশের ওসি, তদন্ত ওসি, দারোগাদের কেউ কেউ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে সকল ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর যাবৎ । আইনশৃংখলা বাহিনীর অনেক সদস্যদের নিয়মিত মাসোয়ারা প্রদান করায় গ্রেফতারকৃত ৫ চাঁদাবাজকে পুলিশ হেফাজতে জামাই আদরের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও চাউর রয়েছে থানা এলাকা জুড়ে।
আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তা ছাড়াও বিশেষ পেশার অনেক নামধারীদের তালিকা তৈরী করে নিয়মিত মাসোয়ারা প্রদান করে যাচ্ছে এই চক্র । ফলে এই চক্রের হোতারা এতো অপরাধ করেও বছরের পর বছর যাবৎ চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধ সাম্রাজ্য ।









Discussion about this post