নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর মুছারচর ও চরতালিমাবাদ গ্রাম এলাকা দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপরিকল্পিতভাবে মাত্রাতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে ওই এলাকার কৃষকদের অনেক আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে আরও কয়েকশ বিঘা আবাদী জমি। হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকায় বসবাসরত শতাধিক নিরীহ মানুষের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন কাঁচা-পাকা স্থাপনা।
অভিযোগ রয়েছে— গত কয়েক মাস ধরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। এলাকাবাসী তাদের আবাদী জমি ও বাড়িঘর রক্ষার্থে রোববার সকালে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গণস্বাক্ষর দিয়ে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মুছারচর ও চরতালিমাবাদ গ্রাম এলাকা দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে লেদামদী গ্রামের আবুল হাসেম রতনের নেতৃত্বে ডিশ আলামিন, সোরহাব, মাসুদ, আমির, শাহিন, গোলজারসহ ২০-৩০ জনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
ফলে ওই এলাকার কৃষকদের অনেক আবাদী জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এলাকার কৃষকদের মামলা ও হামলার ভয় দেখিয়ে সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। এতে ওই এলাকার সাধারণ কৃষকরা সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
চরতালিমাবাদ গ্রামের কৃষক নুরু মিয়া জানান, নদী ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন আছে। সেনাবাহিনী ১০-১৫ ফুট বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছেন। এ সিন্ডিকেট নির্দিষ্ট সীমানা অতিক্রম করে প্রায় ৬০-৬৫ ফুট গভীর করে বালু উত্তোলন করায় কৃষিজমি ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। তাই আমাদের কৃষিজমি রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মুছারচর গ্রামের কৃষক ফিরোজ মিয়া জানান, প্রভাবশালী বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেটের সদস্যরা ১৫-২০ দিন ধরে একই স্থান থেকে গভীরভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে কৃষিজমি ভেঙে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে শতাধিক নিরীহ মানুষের বাড়িঘর। আমরা বাড়িঘর রক্ষায় ও কৃষকদের জমি রক্ষায় প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে মাঠে নামব।
এ ব্যাপারে প্রভাবশালী আবুল হাসেম রতন বলেন, বালু উত্তোলনের সঙ্গে আমি জড়িত নই। তবে এলাকার কিছু লোকজন সিন্ডিকেট করে এ কাজ করছে। কৃষিজমি ভাঙনের বিষয়ে আমার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষক যোগাযোগ করেছেন। এগুলো বাঁশ ও বেড়া দিয়ে বালু ভরাট করে ঠিক করে দেওয়া হবে।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোনের ফলে কৃষকের ক্ষতি হবে এমন কাজ করতে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে কথা বলেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।









Discussion about this post