সোনারগাঁ প্রতিনিধি :
সকল ধরণের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সোনারগাঁয়ে সকল ধরণের পন্যে এবার নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার মারাত্মক আকার ধারণ করেছে । সোনারগাঁ চৌরাস্তায় পুলিশের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আতাঁত করে গোপনে কারখানায় তৈরী করে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সকল প্রশাসনিক সংস্থার নাম ব্যবহার করে ৮/১০টি পাইকারী দোকানে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ এই পন্য । সবচাইতে আশ্চর্য্য বিষয় হলো পলিথিনের দানা ও বিষাক্ত ক্যামিকেল দিয়ে তৈরী নিষিদ্ধ এই পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে শিশু খাদ্যসহ সকল ধরণের খোলা খাদ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রেও । আর এই নিষিদ্ধ ব্যবসার মূল হোতা হাবিব স্থানীয় একজন রাজনৈতিক নেতার ভাতিজা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করছে অহরহ ।
কাঁচাবাজার, মুদিদোকান, শপিং মল, চেইনশপ সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার চলছে কোন ধরণের বাধা ছাড়াই। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এ পণ্য নিয়ন্ত্রণে মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হলেও এর উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার এতটুকুও কমেনি। নির্ভরযোগ্য বিকল্পের অভাবে বাজার সয়লাব হয়ে আছে নিষিদ্ধ পলিথিনে। মাঝে হাতে ঝুলিয়ে ব্যবহার উপযোগী পলিথিন ব্যাগ বন্ধ ছিল। কিছুদিন যাবৎ সেই ব্যাগও সোনারগাঁয়ের বাজারে ফেরত এসেছে।
গত কয়েকদিন সোনারগাঁয়ের আনন্দ বাজার, বৈদ্যের বাজার, উদ্দমগঞ্জ বাজার, কাইক্কার টেক বাজার, বারদী বাজার, মেঘনা বেপাড়ী বাজার, মোগড়াপাড়া বাজার ও মঙ্গলেরগাঁও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকল ধরণের পন্যে ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন । খোলা বাজার থেকে ঝালমুড়ি বিক্রিতেও ব্যবহার হচ্ছে এমন বিষাক্ত পলিথিন। নিষেদ্ধ এই পরিথিনে একদিকে যেমন পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তেমনি খোলা খাবার বিক্রিতে এই নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার মারাত্মক হুমকির মুখে পরছে জনস্বাস্থ্য ।
সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, পলিথিনের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হোক, তারা তা চান না। কিন্তু পলিথিনের মতো সহজলভ্য কোনো পণ্য বাজারে নেই।
মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় হাবিব ওরফে হাবির কয়েকটি দোকান থেকে নিয়মিত প্রতিটি বাজারেরই ফোন দিলেই পাঠিয়ে দিচ্ছে এই পরিথিন। মোগাড়া পাড়া বাজারে কথা হয় একজন ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে। তার হাতে হাতওয়ালা পলিব্যাগে জবাই করা মুরগি। পলিথিনের দিকে তাকিয়ে ইশারা করতেই তিনি বললেন, দোকানদার দিলে কি করব। চারদিকেই তো পলিথিন আর পলিথিন। বন্ধ করার ব্যবস্থা তো দেখি না। এটা বন্ধ হওয়া দরকার কী না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঠেকাতে পলিথিনের ব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করা উচিত এবং তা দ্রুত করা উচিত। এ জন্য সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। সরকার আন্তরিকভাবে না চাইলে পলিথিন বন্ধ করা সম্ভব না বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
বারদী বাজারের ফল বিক্রেতা আরমান বলেন, একশ’ কাগজের ঠোঙা দুই থেকে তিনশ’ টাকায় কিনতে হয়। অন্যদিকে এক কেজি পলিথিন কেনা যায় ১৫০ টাকায়। এতে দুই থেকে আড়াইশ’ পলিথিন হয়। পলিথিন কম দামে পাওয়া যায় বলে তারা ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশে পলিথিন নিষিদ্ধ হয় ২০০২ সালে। পরিবেশবিদরা বলছেন, পলিথিন নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের ব্যর্থতার কারণেই পলিথিন থেকে মুক্তি মিলছে না। গত বছরের শুরুতে উচ্চ আদালত পলিথিন এবং একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধের ব্যবস্থা নিতে এক বছর সময় বেঁধে দেন। কিন্তু তাতেও বন্ধ হচ্ছে না।
সোনারগাঁ চৌবাস্তা এলাকার নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসার হোতা হাবিরের মুঠোফোন (০১৮১২………………৯০) নাম্বারে গত সাত দিন যাবৎ অসংখ্যবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার নিষিদ্ধ এই ব্যবসার বিষয়ে কোন মন্তব্য পাওযা যায় নাই ।
এমন গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, ওসির নাম ব্যবহার করা সহজ তো । সকল অপরাধীকে নিজেদের রক্ষা করতে আমাদের নাম ব্যবহার করে । তবে এই বিষয়টি অবশ্যই আমি দেখবো ।









Discussion about this post