ডিবি পরিচয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৭’লাখ টাকা দাবী, আদায় ২’লাখ ৭০’হাজার ।
গজারিয়া থেকে মিঠুকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ – এমন দাবী গজারিয়া থানার ওসি হারুন অর রশিদের
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৭’লাখ টাকা দাবী, ২’লাখ ৭০’হাজার টাকা নগদ আদায় । মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে মিঠুকে আদালতে প্রেরণ করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই কামাল হোসেন । মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা থেকে গত শুক্রবার সন্ধায় প্রথমে র্যাব, পরে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পরিচয়ে মিঠুকে তুলে নিয়ে আসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই কামাল হোসেন ও এএসআই মোমেন আলম ।
মিঠুর স্ত্রী দিলারার কাছ থেকে নগদ ২’লাখ ৭০’হাজার টাকা নিয়ে বাকী টাকা ভোর ৫’টার মধ্যে পরিশোধ না করলে মিঠুকে ক্রস ফায়ার দিয়ে বাসায় লাশ পাঠিবে মর্মে হুমকি দেয় এসআই কামাল হোসেন।
মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার তেতৈইতলা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্ধা জাফর আলীর ছেলে মিঠু(২৫)। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় এলাকার সাত্তারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার সকাল সোয়া ১১ টায় এনায়েত নগর তাঁতখানা বাজারের সামনে পাকা রাস্তার উপর থেকে জাফর আলীর ছেলে মিঠুকে ৫২ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই মোমেন আলম সঙ্গীয় ফোর্সসহ গ্রেফতার করে। ধৃত মিঠুকে একই দিন মাদক মামলা দায়ের পূর্বক সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মোঃ কামাল হোসেন আদালতে প্রেরণ করে।
এ ব্যপারে মিঠুর স্ত্রী দিলারা জানায়, আমার স্বামী মিঠুকে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার তেতৈইতলা এলাকা থেকে কালো রংয়ের হাইছ গাড়ীতে র্যাব পরিচয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে আমার স্বামী মিঠু মোবাইল ফোনে আমাকে ফোন করে ৭ লাখ টাকা আনতে বলে। আমি কারন জানতে চাইলে প্রথমে র্যাব পরিচয়ে পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই কামাল হোসেন টাকা না দিলে আমার স্বামীকে ক্রস ফায়ার দিবে বলে ভয় দেখায়।
পরে আমি ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা জোগার করে আমার স্বামী মিঠুর নাম্বারে ফোন দেই। ফোনে আমাকে টাকার জোগার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আমি টাকা কোথায় নিয়ে আসবো জানতে চাই। তারা আমাকে চিটাগাং রোড আসতে বলে। আমি চিটাগাং রোড আসলে তারা আমাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দিকে আসতে বলে। আমি থানার সামনে গেলে কালো রংয়ের হাইছ গাড়ীটি গতি রোধ করে আমাকে গাড়ীতে উঠায়। গাড়ীতে থাকা এসআই মোঃ কামাল হোসেন ও এএসআই মোমেন আলম টাকা আনছি কিনা জানতে চায়।
এসময় আমি আমার স্বামীকে দেখতে চাইলে তারা আমাকে পিছনে ফিরতে বলে। পিছনে ফিরে দেখি হাইছ গাড়ীর কোনায় চোখ বাধা অবস্থায় আমার স্বামী মিঠু বসে আছে। এসময় গাড়ীতে থাকা লোকজন আমার কাছে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে ব্যাগের ভিতরে থাকা ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে নেয় এবং বলে মিঠুকে ক্রস ফায়ার থেকে বাচাতে হলে ভোর ৫ টার মধ্যে আরো ৩লাখ টাকা নিয়ে আসবি। এই বলে আমাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দেয়।
আমি সকালে নারাণগঞ্জ ডিবি অফিসে গেলে আমার স্বামীকে দেখতে না পেয়ে ক্রস ফায়ার দিয়েছে মর্মে আতৎকে উঠি। পরে ডিবি পুলিশের এসআই আব্দুল জলিল আমাকে শান্তনা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সামনে আসলে আমি গাড়ীটি চিনতে পারি। এসময়, আমার কাছে বাকি টাকা দাবি করে, আমি টাকা নিয়ে লোক আসতেছে বললে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে আমার স্বামীকে থানা হাজতে নিয়ে যায়।
আমার স্বামীকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে আদালতে পাঠায়। মামলায় উল্লেখিত আসামীর বর্তমান ঠিকনার বাড়ীর মালিক সাত্তার মিয়ার স্ত্রী জানায় মিঠু নামে কোন ভাড়াটিয়া আমাদের বাসায় ভাড়া থাকে না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি এ বিষয়ে বলেন, মাদক ব্যবসায়ী আটক করা হলে তাদের পরিবার নিজেদের নির্দোষ দাবি করেই। মিঠুর বিরুদ্ধে একাধীক মামলা রয়েছে। ক্রসফায়ার ও টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ মিথ্যা।
অভিযোগের বিষয়ে এসআই কামাল হোসেন জানান, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার কোন গাড়ি নাই। আসামী কোথা থেকে ধরেছেন ও টাকা আদায় বিষয়ে প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে এসআই কামাল চায়ের দাওয়াত দেন। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, থানায় আসেন। চা খেতে খেতে তথ্য দেই।
মিঠুকে আটকের বিষয়ে জানাতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ রলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ মিঠুকে গজারিয়া থেকে আটক করে নিয়ে গেছে এটা ঠিক । এর বাইরে কি হয়েছে তা জানা নািই । তবে মিঠু মাদক ব্যবসায়ী ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক-অঞ্চল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, মাদকসহ আসামী আটকের বিষয়টি জানি। পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ করেনি ।









Discussion about this post