সোনারগাঁ উপজেলায় মঙ্গলবার সকালে মোগরাপাড়া এলাকায় বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে এসে করোনা রোগী সন্দেহে জগনাথ নামের এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীকে আটক করেছে এলাকাবাসী। পরে সোনারগাঁ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় প্রেরণ করে। আটককৃত যুবক কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার স্বপহাম গ্রামের হরিদাসের ছেলে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বেড়াতে আসা প্রবাসী এক যুবককে নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটেছে। সে ইতালি থেকে এসেছে এবং তার শরীরে করোনা ভাইরাস রয়েছে এমন সন্দেহে এলাকাবাসীর মধ্যে হুলস্থূল পড়ে যায়। যে বাড়িতে ওই যুবক বেড়াতে এসেছেন সে বাড়িও ঘেরাও করে রাখেন স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হয় থানা পুলিশকেও।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকালের দিকে উপজেলার মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের ভৈরবদী গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
প্রবাসী ওই যুবক কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার স্বপহাম গ্রামের হরিদাসের ছেলে জগন্নাথ (৩৭)। তিনি ভৈরবদী গ্রামে তার আত্মীয় হরি কিশোরের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ওই যুবক সম্প্রতি ইতালি থেকে দেশে ফেরত এসেছেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লাতে। তিনি এসেই তার আত্মীয় সোনারগাঁয়ে হরি কিশোরের বাড়িতে বেড়াতে আসেন এবং এখানে সেখানে অবাধে চলাফেরা করছিলেন। এতে লোকজনের সন্দেহ হয় তার শরীরে করোনা ভাইরাস রয়েছে।
এ ঘটনার খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে আতংক দেখা দেয়। পরবর্তীতে যুবককে অবাধে চলাচল করতে নিষেধ করলেও তিনি বিষয়টি কর্ণপাত না করায় সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।
তবে সোনারগাঁ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান এ ব্যাপারে বলেন, আমরা কাউকে আটক করিনি। আর ওই যুবক ইতালি থেকে এসেছেন বলেও নিশ্চিত নই। তবে তিনি সিঙ্গাপুর বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে এসেছেন বলে তার আত্মীয়ের কাছ থেকে শুনেছি।
ওসি আরও বলেন, এলাকাবাসীর ধারণা ছিল প্রবাস ফেরত ওই যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাস রয়েছে। এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। শুনেছি পুলিশ যাওয়ার আগেই সে ওই গ্রাম থেকে চলে গেছে।
এদিকে এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহম্মেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি পুরো বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঘটনাস্থলে লোকও পাঠিয়েছি। আমাদের ইউএনও’র মাধ্যমে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি পুরো বিষয়টি গুজব।
তিনি বলেন, ছেলেটির বাড়ি কুমিল্লাতে। এক মাস আগে সে সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে। তার পরিবার বিয়ে ঠিক করে কিন্তু সে বিয়েতে রাজি হচ্ছে না। তাই পরিবারের চাপের মুখে সে সোনারগাঁয়ে তার বোনের বাড়িতে এসে লুকিয়ে ছিল।
সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহম্মেদ আরো বলেন, বিষয়টা যতটুকু বুঝেছি, পাত্রী পক্ষই কৌশলে সোনারগাঁয়ে গুজব ছড়িয়েছে সে ইতালি থেকে এসেছে এবং তার শরীরে করোনা ভাইরাস আছে ।









Discussion about this post