টোকাই থেকে তেল চোরের হোতারা বর্তমানে নিজেদেরকে আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাদের অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে । এমন টোকাইরা নিজেদেরকে সিদ্ধিরগঞ্জের গডফাদার হিসেবেও পরিচয় দিয়ে গর্বরোধ করে আসছে । আইনশৃংখলা বাহিনীরসাথে ইদুর বিড়াল খেলার পর এবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে আবারো লম্ফঝম্ফ শুরু করেছে সিদ্ধিরগঞ্জের তেলচোরদের গডফাদার স্বপন মন্ডল ও তার বাহিনী । একই সাথে বিরামহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তেল চুরি ।
ডিপোর কর্মকর্তাদের যোগসাজসে বিরামহীনভাবেই চলছে তেল চুরির মহাযজ্ঞ । প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, ডিপোর প্রায় সকল কর্মকর্তা, থানা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ছাড়াও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এবং বিশেষ পেশার কয়েকজন নিয়মিত চোরাই তেলের কারবার থেকে মাসোয়ারা আদায় করার কারণে চোরদের হোতারা বীরদর্পে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবারো চালাচ্ছে অপকর্ম ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
জানা যায়, ২৭ আগস্ট রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের এসও রোড এলাকায় স্বপন মন্ডলের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমানের চোরাই তেলসহ ২ সহযোগিকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাব বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় পলাতক আসামী করা হয়েছে এসও রোড এলাকার চোরাই তেল কারবারীদের মূলহোতা এম এ স্বপন ওরফে স্বপন মন্ডলকে। স্বপন মন্ডল নাসিক সিদ্ধিরগঞ্জের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের চাচাতো ভাই এবং তার সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম একজন ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের শেল্টারে এসও রোড এলাকার চোরাই তেলের কারবার নিয়ন্ত্রন করে আসছিল এম এ স্বপন ওরফে স্বপন মন্ডল। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের গভীর সম্পর্ক থাকায় এলাকায় প্রকাশ্যে থাকলেও ৮ দিনেও গ্রেফতার হননি স্বপন মন্ডল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ আগষ্ট রাতে গোদনাইল এসও এলাকায় স্বপন মন্ডলের চোরাই জ্বালানী তেলের আস্তানা থেকে মোঃ ইমাম হোসেন (৩৫) ও মোঃ শফিকুল ইসলামকে (৪৬) গ্রেফতার করে র্যাব। এসময় নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম এম এ স্বপন ওরফে স্বপন মন্ডল (৪০) কৌশলে পালিয়ে যায়।
এজহারে উল্লেখ করা হয়, পলাতক আসামী এম এ স্বপন ওরফে স্বপন মন্ডলসহ গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ চোরাই জ্বালানী তেল এটিএফ জেট ফুয়েল) নিজেরা মজুদ রেখে কেনাবেচা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীরা অভ্যাাসগতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন কৌশলে অবৈধ উপায়ে জ্বালানী তেল সংগ্রহ এবং মজুদ করে অবৈধভাবে কেনাবেচা করে আসছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। আসামীদের স্বীকারোক্তি মতে ৫টি লোহার ড্রামে ভর্তি মোট ১ হাজার পঞ্চাশ লিটার জেট ফুয়েল যার আনুমানিক মূল্য ৭৫ হাজার ৬’শ টাকা জব্দ করা হয় । এছাড়া পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ১টি পিকআপ ভ্যান (ঢাকা মেট্রো ন ১৬-৩৯০৩) ধৃত আসমী মোঃ ইমাম হোসেনের কাছ থেকে তেল বিক্রির নগদ ৫৫ হাজার ৯০ টাকা জব্দ করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে একজন সদ্য বিদায়ী কর্মকর্তা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের তেল চুরি কখনো ই বন্ধ করা যাবে না । এদের সাথে রাজনীতিবিদ, বড় বড় আমলা, প্রশাসনের নামধারী কর্মকর্তা, থানা পুলিশসহ বিশেষ পেশার ছোট বড় অনেকেই নিয়মিত মাসোয়ারা নেয় । দিনের বেলায় যেমন তেমন রাতের আধারে তেলচোরদের সকল চক্র কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠে তা কেউ চিন্তাই করতে পারে না । এদের হাতে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র । তাই আইনশৃংখলা কাজে নিয়োজিত অনেকেই দিনে ও রাতের আধারে টু পাইস নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না । একবারেই ফিল্মী ষ্টাইলে চলছে এমন অপরাধ সাম্রাজ্য ।









Discussion about this post