এমএম সালাহউদ্দিন :
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাতিলের দাবিতে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ১৯৯৮ সালের ৯ জুন লংমার্চ করেছিল বিএনপি । আলোচিত সেই লংমার্চটি ঠেকাতে আগের দিন ৮ জুন রাত ৮টার পর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা। তারা রাস্তার পাশের গাছ কেটে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন পরিবহণের চাকার পাম্প ছেড়ে দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
চট্রগ্রাম, কক্সসবাজার, সিলেট, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৩৮টি রুটের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ওই রাতে রাস্তায় আটকেপড়া যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ আর ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
পরের দিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সেই লংমার্চটি নারায়ণগঞ্জে এসে সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাধার কারণে সাইনবোর্ডে মহানগর ফিলিং স্টেশন নামে ওই পেট্রল পাম্পে অবস্থান নেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের সিনিয়র নেতাকর্মীরা ।
খবরটি সেই সময়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও ফলাও করে প্রচার হয়। বিকালের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পিছু হটে। একপর্যায়ে সেদিন রাত ৭টার পর পুলিশ গাছের গুঁড়ি সরিয়ে ফেললে যান চলাচল শুরু হয়।
এ ঘটনার পর থেকে খালেদা জিয়া যতবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কোনো জেলায় সফরে গেছেন, ততবারই তিনি তার গাড়িবহর থামিয়ে সাইনবোর্ডের মহানগর ফিলিং স্টেশনে গিয়ে সেখানকার স্টাফদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আসতেন।
তিন দশক পুরনো সেই মহানগর ফিলিং স্টেশনটি এখন ভেঙে ফেলা হচ্ছে। একই সঙ্গে এটির বিপরীত দিকে অবস্থিত রঙধনু নামে আরও একটি পেট্রলপাম্পও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডটি চার লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের জন্য পেট্রলপাম্পটি ভাঙা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে লিংক রোড ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের উপপ্রকল্প ব্যবস্থাপক ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন শামীম বলেন, সাইনবোর্ডে যানজট কমানোর জন্য ছয় লেন প্রকল্পে দুটি ইউটার্নও নির্মাণ করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামমুখী যানবাহনের জন্য মাতুয়াইলে এবং চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জমুখী যানবাহনের জন্য সানারপাড়ে ইউটার্ন দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ কারণে সাইনবোর্ডে রাস্তার দুই পাশে সরকারি জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলা দুটি পেট্রলপাম্প ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এরই মধ্যে রঙধনু নামে পেট্রল পাম্পটির ৮০ শতাংশই ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর রাজধানী পেট্রলপাম্পটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। নেহাতই রাস্তা উন্নয়নের জন্য এটি ভাঙা হচ্ছে। এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই বলে জানান ওই কর্মকর্তা ।
সূত্র : যুগান্তর









Discussion about this post