নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এক শ্রমিককে মারধরের অভিযোগে চার ঘণ্টা অক্সিজেন উৎপাদন বন্ধ ছিল।
শনিবার (২৪ জুলাই ) দুপুরে উপজেলার বরপা এলাকায় মজুমদার গ্রুপের মালিকানাধীন এ কে অক্সিজেন লিমিটেডের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত সাড়ে চার হাজার ঘনলিটার অক্সিজেন উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক আনসার সদস্য ওই শ্রমিককে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ কে অক্সিজেন লিমিটেডের পরিচালক জয়নাল আবেদিন প্রথম আলোকে জানান, শনিবার বেলা ১টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল তাঁদের প্রতিষ্ঠানে যান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কারখানা খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে একজন প্রকৌশলী এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা একজন আনসার সদস্য প্ল্যান্টে কর্মরত এক শ্রমিককে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। তখন কারখানার অন্য শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উৎপাদন বন্ধ করে দেন।
টানা চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে বিকেল পাঁচটায় আবার উৎপাদন শুরু হয়। ঘটনার সময় কারখানাটিতে অন্তত ১৭০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। চার ঘণ্টায় তাঁদের অন্তত সাড়ে চার হাজার ঘনলিটার অক্সিজেন উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অক্সিজেন কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়টিকে দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করে জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য গত দুই ঈদে কোনো শ্রমিককেই আমরা ছুটি দিতে পারিনি। শ্রমিকেরা রাত–দিন টানা কাজ করে ক্লান্ত। এরই মধ্যে একজন শ্রমিক মারধরের শিকার হওয়ায় অন্যরাও ক্ষুব্ধ হন।’
জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিধি নিষেধের মধ্যে কারখানা খোলা রাখার কারণ জানতে সেখানে গিয়েছিলাম। অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জানার পর আমরা চলে এসেছি। সেখানে কোনো শ্রমিককে মারধর করা হয়নি। কারখানার অভ্যন্তরীণ কোনো ঝামেলার কারণে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে।’
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, বিধিনিষেধের মধ্যে কিছু শিল্পকারখানা খোলা রাখা হয়েছে। সে অভিযোগের ভিত্তিতেই অন্যান্য কারখানার পাশাপাশি এই কারখানাতেও ম্যাজিস্ট্রেট গিয়েছিলেন। অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জানতে পেরে ম্যাজিস্ট্রেট তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে চলে এসেছেন।’
শ্রমিককে মারধরের বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘এমন একটি মৌখিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তবে প্রাথমিকভাবে সেটার সত্যতা খুঁজে পাইনি। এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’









Discussion about this post