দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে রোববার ২৪ এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে চালু হয়েছে ১৮টি লঞ্চ। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে যাত্রী ও লঞ্চ শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে শনিবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে লঞ্চ চালুর দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলন করে আসছিল শ্রমিক ও কর্মচারীরা।
আজ রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এই ১৮টি লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে । এই ১৮টি লঞ্চের মধ্যে ১৫টি চাঁদপুর রুটের এবং তিনটি হোমনা-রামচন্দ্রপুর, ওয়াবদা, সুরেশ্বর-নরিয়া (শরিয়তপুর) রুটের। তবে বন্ধই থাকছে মুন্সিগঞ্জ ও মতলব-মাছুয়াখালী রুটের লঞ্চগুলোর চলাচল।
এই ঘটনার চার দিন পরে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ নৌপথে একটি সি-ট্রাক চালু করা হয়। এবং নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর নৌপথে ঢাকা থেকে আগত দুটি লঞ্চ চালু করা হয়। আর নারায়ণগঞ্জের ছোট লঞ্চগুলো অনিরাপদ বলে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরে যুক্ত শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্থা না করে হঠাৎ করে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিক ও কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছিল। নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরে যুক্ত প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মচারী ও তাদের পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন।
এসকল শ্রমিক ও কর্মচারীদের পরিবার অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিক কর্মচারীরা বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে আন্দোলনে নামে। তারা গত ১৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে লঞ্চ চালুর দাবি জানানোর পাশাপাশি গত ১৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালে গণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করে বিক্ষোভ দেখায়।
পরে গত ২০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের বন্ধ হয়ে যাওয়া লঞ্চ চালুর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিদর্শনে এসেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এসময় তার সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) আবু জাফর হাওলাদার, নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল মতিন, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ পরিচালক মো: ইসমাইল হোসেন প্রমূখ। এছাড়াও লঞ্চ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
তখন পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে আজকে পরিদর্শন করেছি। আমরা প্রবলেম ফাইন্ড আউট করেছি। তাদের (লঞ্চ মালিক) সাথে মত বিনিময় করেছি। ঊর্ধ্বতনদের কাছে এগুলো দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার জানান, ২৩ এপ্রিল বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ১৮টি লঞ্চ চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এসব লঞ্চ চলাচল শুরু হবে।
এই লঞ্চগুলো হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর রুটে ১৫টি। বাকী ৩টি লঞ্চ হচ্ছে হোমনা-রামচন্দ্রপুর ১টি, ওয়াবদা, সুরেশ্বর-নরিয়া (শরিয়তপুর) রুটের। তবে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ রুটের ২৫টি ও মতলব-মাছুয়াখালী রুটের ১৯টি লঞ্চ চলাচল করবে না। এছাড়াও সিট্রাকসহ অন্য যে দু’টি লঞ্চ চালু ছিল সেগুলোও চলাচল করবে।









Discussion about this post