সোনারগাঁয়ে ‘র্যাব পরিচয়ে’ ছিনতাইয়ের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতাকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পুলিশ দশদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে সোনারগাঁ পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান রবিন (৩৩) ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান ওরফে সাজুকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘র্যাব’ পরিচয়ে ২৮৩টি মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা করেন কুমিল্লার ব্যবসায়ী মো. সুমন। মামলার পর উপজেলার খাসনগর এলাকার রয়েল রিসোর্টের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
২০২১ সালের জুলাইতে একটি গার্মেন্টসের মালামাল লুটের ঘটনায় রবিনের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে ছাত্রলীগের কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলেও জানান সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাসেল৷

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা সদরে ভুক্তভোগী সুমনের একটি দোকান রয়েছে। তিনি ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল বিক্রি করেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকার দিকে যাওয়ার সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় এলাকায় ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে’ দুই সহযোগীকে নিয়ে সুমনের গাড়ি থামিয়ে ২৮৩টি মোবাইল ছিনতাই করে ছাত্রলীগের এই দুই নেতা।
এই ঘটনার ১২ দিন পর সোনারগাঁ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ তিন জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও একজনকে আসামি করে মামলা করেন সুমন।
ছাত্রলীগের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, চুরি ও ভূমিদস্যুতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দু’জনই এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে সোনারগাঁ থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, র্যাব পরিচয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলার পর রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে রবিন ও সাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার অপর আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ছিনতাইয়ের মামলায় আমরা তাদের গ্রেপ্তারের খবর শুনেছি। ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে এসব কর্মকান্ড করায় আমরা বিব্রত। রবিন ও সাজুর বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। আগেও তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে।’
‘আমরা জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।’, যোগ করেন এ ছাত্রলীগ নেতা।
এর আগে গত ১৩ মে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে ছিনতাইয়ের মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তপু চন্দ্র ঘোষকে তার ৩ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে বন্দর থানা পুলিশ। তপু চন্দ্র ঘোষও সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া উপজেলার অর্জুনদি গ্রামের বাসিন্দা।









Discussion about this post