নারায়ণগঞ্জ শহর যেন ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য। কাকডাকা ভোর থেকে সারাদিন রাত পালাক্রমে ছিনতাইকারী চক্র যেন রোষ্টার (পালাক্রমে) করে অপরাধ কর্মকাণ্ড অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে ।
আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল পুলিশের সাথে যেন ছিনতাইকারী চক্রের গভীর সখ্যতা । আশ্চর্য হলেও সত্য পুলিশের কোন কোন সদস্যদের সাথে চিৎকার করে প্রায়ই বলতে শোনা যায়, ‘স্যার চইল্লা যান, পরে আইয়া দেখা করমুনে !’
প্রায় প্রতিনিয়ত: ছিনতাইকারীদের সাথে পুলিশের এমন সম্পর্কের কারণে নগরীতে বসবাসরত লাখো মানুষ যেন হতবাক হয়ে অসহায়ের ভূমিকায় অবস্থান নেয় । কেউ টু শব্দ করার সাহস করে না।
প্রাতভ্রমণে এসে শত শত নারী পুরুষ এই ছিনতাইকারীদের মাদক সেবন – বিক্রি, ছিনতাইয়ের চিত্র স্বচক্ষে দেখে মুখ বন্ধ করেই থাকতে বাধ্য হন।
এমন চিত্র প্রতিদিনের ।
এমন অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষ কোন প্রতিকার না পেয়ে গেলো বুধবার (২২ নভেম্বর) মধ্যরাতে নগরীর নিতাইগঞ্জের কাচারীগল্লী এলাকায় কুখ্যাত ছিনতাইকারী হাবু (৩২) কে কুপিয়ে হত্যা করে । এরপরেও ছিনতাইকারীদের দৌড়াত্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই পুলিশ ।
ছিনতাইকারী হাবুর এমন নির্মম হত্যাকান্ডের পর নগরীতে সাড়াশি অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং লিডারসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি সুইচ গিয়ার, একটি নাকোল ডাস্টার ও একটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো—নগরীর নতুন জিমখানার একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া রহিমের ছেলে আলতাফ হোসেন হৃদয়, আসাদ নগরের জল্লারপাড়ের একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া বিষু মিয়ার ছেলে রিফাত মিয়া, নতুন জিমখানার বাসিন্দা মোকলেছের ছেলে ফয়সাল, ১ নম্বর বাবুরাইলের জোড়াপোল এলাকার একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া সানি পিতা-মো. নুরুজ্জামান এবং জল্লার পাড়ের মসজিদ গলির একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া গাজী মারফাতের ছেলে রবিন। গত মঙ্গলবার রাতে শহরের নিমতলা এলাকায় শ্রীশ্রী শীতলা মায়ের মন্দিরের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১১-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সড়কে পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে অস্ত্রশস্ত্রের মহড়া ও দাপট প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিশৃঙ্খলা এবং অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা জনমনে ত্রাসের সৃষ্টির মাধ্যমে জনসাধারণের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। এলাকাবাসী তাদের হিংস্রতা, অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে ছিনতাই ও চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে দলগতভাবে শক্তির মহড়া, দাপট প্রদর্শনসহ গুরুতর ধর্তব্য অপরাধ সংঘটন করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা এলাকাসহ আশপাশ এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে জনমনে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে ছিনতাই এবং বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
ছিনতাইকারী হাবুর এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরও শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) ক্রাইমজোন জিমখানা এবং রাসেল পার্ক এলাকায় ছিনতাইকারী চক্রের অবস্থান ছিলো চোখে পরার মতো।









Discussion about this post