এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ মে রুলসহ এ আদেশ দেন। ফলে এ সময়ে বিপণিবিতান নির্মাণের কাজ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী।
ওই বিপণিবিতান নির্মাণ কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিট টি করেন।
জমিটি নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের ঠিক পশ্চিম পাশে। সাড়ে তিন বিঘার মতো আয়তনের সেই জমিতে মাল্টিমোডাল হাব (কেন্দ্র) নির্মাণের কথা। অর্থাৎ সেটি হওয়ার কথা রেল, নৌ ও সড়কপথে চলাচলের একটি কেন্দ্র।
আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন ও এম ফেরদৌস আল বসির শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজাওয়ার।
আদেশের বিষয় জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন গণমাধমকে বলেন, যে জায়গায় রেলওয়ে (কর্মচারী) কল্যাণ ট্রাস্ট বিপণিবিতান নির্মাণ করছে, সেই জায়গার অবস্থান ও দখলের ওপর পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মাল্টিমোডাল হাব (কেন্দ্র) নির্মাণের জন্য স্থানটি নির্বাচন করা হয়েছে। ভবনের নকশার অনুমোদন না নিয়ে ইতিমধ্যে রেলওয়ের ওই জমিতে বিপণিবিতান নির্মাণ করছিল কল্যাণ ট্রাস্ট। স্থিতাবস্থার আদেশের ফলে বিপণি বিতান নির্মাণ করা যাবে না।
এর আগে ‘সব আপত্তি উপেক্ষা করে রেলওয়ের সেই জমিতে বিপণি বিতান’ শিরোনামে গত ৯ মে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য প্রকল্প নিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি জমি নির্ধারণ করা আছে অনেক বছর আগে থেকে। কিন্তু মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনায় না নিয়ে সেই জমিতে বিপণিবিতান তৈরি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে (কর্মচারী) কল্যাণ ট্রাস্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের ঠিক পশ্চিম পাশে এই জমি মাল্টিমোডাল পরিবহন হাব নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করা আছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ)। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায়ও (আরএসটিপি, ২০২২-৩৫) একই প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দরকে সংযুক্ত করতে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কদমরসুল সেতু নির্মাণ প্রকল্পে সড়ক প্রশস্ত করতে রেলওয়ের ওই জমির কিছু অংশ অধিগ্রহণ করার কথা।
উচ্চ আদালতের এমন আদেশের পর রেলওয়ের জমিতে মার্কেট নির্মানের স্থগিতাদেশের সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয় নাসিকের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে স্থগিতাদেশের সাইনবোর্ড টাঙ্গানোকালে নাসিকের ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস বলেন, এটা দীর্ঘ বারো বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন পক্ষ থেকে বিতর্কিত জমির ব্যাপারে রেলসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। কদম রসূল ব্রিজটা যেখানে শেষ হবে সে জায়গাটা এখান থেকে একটু সামনেই। পাশাপাশি এ ব্রিজ দুই লেনের আর রাস্তা দুই লেনের। চার লেন যদি থাকে তাহলে এখানে এমন মার্কেট করার সুযোগ নেই। তাই হাইকোর্ট এ মার্কেটের কাজ বন্ধের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আজ আমরা এখানে এসে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কাজ করলে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব।









Discussion about this post