নভেল করোনাভাইরাসের কারণে জানুয়ারিতে শুরু হয়নি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। তবে আগামী মার্চে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিবর্তে পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে নবনির্মিত বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফইসি) অনুষ্ঠিত হবে মাসব্যাপী এ মেলার ২৬তম আসর।
বিসিএফইসিতে হল রুম, কনফারেন্স সেন্টার, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, সভাকক্ষ, প্রেসকেন্দ্র, সার্ভিস রুম, আধুনিক গাড়ি পার্কিং, রাউন্ড-দ্য-ক্লক সিসিটিভি, এমনকি নিজস্ব বিদ্যুতের সাব-স্টেশনসহ বিশ্বমানের সব সুবিধা রয়েছে।
আধুনিক ভেন্যুতে মেলার আয়োজন হওয়ায় বিদেশি ব্যবসা ও গ্রাহকদের আরো বেশি আকৃষ্ট করার পাশাপাশি আগে আগারগাঁওয়ের আশপাশে যে যানজটের সৃষ্টি হতো, তা থেকে মুক্তি পাবে নগরবাসী।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৯৯৫ সাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে আসছে। এর আগে ২৫তম ডিআইটিএফের সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী জানিয়েছিলেন, ২৬তম বাণিজ্যমেলা পূর্বাচল নতুন শহরে অনুষ্ঠিত হবে।
নারায়নগঞ্জ সদর উপজেরা এলাকার গৃহবধু বাসিন্দা অনিতা রায় (৪০) জানান, তিনি বহুবার আগারগাঁওয়ে বাণিজ্য মেলায় গেছেন। পোশাক, খাবারের জিনিসপত্র, গৃহ সরঞ্জাম ও ইলেকট্রনিক পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য কম দামে কিনতে মেলায় গেছি। তবে ভিড়ের পাশাপাশি ধুলা, বর্জ্য, বায়ু ও শব্দ দূষণের কারণে মেলার জায়গাটি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ছিল। আন্তর্জাতিক মানের জায়গায় ভালো পরিবেশে এবারের মেলাটির আয়োজন সত্যিই দুর্দান্ত হবে হবে বলে আশা করছেন তিনি । একই সাথে নারায়ণগঞ্জে এই আয়োজন হওয়ায় আবেগের মাত্রাও আরো বেশী ।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে ইপিবি সেক্রেটারি মো. ইফতিখার আহমেদ চৌধুরী জানান, মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চের সঙ্গে মিল রেখে তাঁরা মেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ইফতিখার আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের সব নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন এটি হস্তান্তর করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান হবে। মেলা যথারীতি মাসব্যাপী হবে, তবে তারিখটি এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই একটি সঠিক তারিখ নির্ধারণ করবেন। তারপর আমরা টেন্ডার ঘোষণা করব এবং বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোতে চিঠি দেব।’
ইফতিখার আহমেদ আরো বলেন, ‘পূর্বাচলে ২৬ একর জায়গাজুড়ে প্রায় ৩০০টি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্টল স্থাপন করা যেতে পারে। কোভিড-১৯-এর কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মাস্ক ছাড়া মেলায় প্রবেশ করা যাবে না। বেশিরভাগ স্টল দুটি হলরুমে স্থাপন করা হবে, তবে কিছু স্টল খোলা মাঠেও স্থাপন করা যেতে পারে।’
ইপিবি সেক্রেটারি আরো জানান, তারা আরো বিদেশি ব্যবসা এবং গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য পূর্বাচল ভেন্যুতে মেলার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডিআইটিএফের আগের ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার ব্যবস্থা করা যায়নি। তাই সরকার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে এটি স্থায়ী ভেন্যুতে ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইফতিখার বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিজনিত কারণ ছাড়াও স্থায়ী ভেন্যুটি নতুন এবং রাজধানীর বাইরে অবস্থিত হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার উপস্থিতি কম হতে পারে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২৫তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় বাংলাদেশসহ ২১টি দেশ থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ৪৮৩টি স্টল ছিল। ওই মেলায় বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো প্রায় ২০০ কোটি টাকার রপ্তানি অর্ডার পেয়েছিল। বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে ভারত, ভুটান, পাকিস্তান, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, জার্মান, হংকং, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, মরিশাস, রাশিয়া, ইরান এবং সোয়াজিল্যান্ড অংশ নেয়









Discussion about this post