‘তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে তুমি বইলো, হ্যাঁ আমি সব জানি। এইরকম কিছু একটা বইলো।’ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীকে নিয়ে অবস্থানের সময় স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর স্ত্রীকে ফোন করে এসব কথা বলেন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
তার এই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর অডিওটি সংগ্রহ করেছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট। ফোনালাপে রিসোর্টের ওই নারীকে জনৈক শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের স্ত্রী সম্বোধন করেন মামুনুল।
অথচ সোনারগাঁয়ে রিসোর্টে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক আল্লাহর কসম কেটে শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের স্ত্রীকেে নিজের স্ত্র্রী বলে জোর দাবি করে।
শনিবার (৩ মার্চ) সকালে মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে ওঠেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর গণমাধ্যম কর্মী ও উত্তেজিত জনতা রিসোর্টে ঢুকে ওই নারী সঙ্গীসহ তাকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে মামুনুল হককে আটিক করে থানায় উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় ।
পরে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে হেফাজতের নেতাকর্মীরা রয়েল রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। পরে হেফাজতের নেতাকর্মীরা তাকে ওই রিসোর্ট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
সোনারগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) তবিদ রহমান জানান, হেফাজতের নেতাকর্মীরা এসে হট্টগোল শুরু করলে মামুনুল হককে তারা ছেড়ে দেন। পরে হেফাজতের নেতাকর্মীরা মামুনুল হক ও তার নারী সঙ্গীকে নিয়ে চলে যায়।
আটকের পর মামুনুল হক দাবি করেন, সঙ্গে থাকা ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার নাম আমেনা তৈয়াবা। ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক ওই নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। যদিও ওই নারী নিজেকে জান্নাত আরা জান্নাত বলে পরিচয় দেন।
হেফাজতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার এই বক্তব্যের সমর্থনে নানারকম মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
তবে মামুনুল হক ফোনালাপে তার স্ত্রীকে ওই নারীর পরিচয় হিসেবে শহীদুল ইসলাম নামে কোনও এক ব্যক্তির স্ত্রী বলে জানান। বাসায় গিয়ে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য স্ত্রীকে আগে থেকেই ‘সব জানি বলে’ মিথ্যা কথা বলার পরামর্শ দেন।
ফোনালাপ:
মামুনুল হকের স্ত্রী: আসসালামু আলাইকুম
মামুনুল হক: ওলাইকুম সালাম ওয়া রহমতুল্লাহ। পুরা বিষয়টা আমি তোমাকে সামনে আইসা বলবো। ওই মহিলা যে ছিল সাথে সে হইলো আমগো শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। বুঝছো? ওইটা নিয়া এমন একটা মানে অবস্থা এরকম তৈরি হইয়া গেছে যে এই কথা বললে তারা ওখানে মানে ই কইরা ফেলছিল আমাকে।
মামুনুল হকের স্ত্রী: আচ্ছা, বাসায় আসেন, তারপর যা বলার তারপর বইলেন।
মামুনুল হক: বলুম তো। তুমি বিষয়টা মানে অন্যান্য কথা বলতে হইবো, পরিস্থিতিটা এমন হইয়া গেছে। এখন এই জন্য তুমি আবার মাঝখান দিয়া অন্য কিছু মনে কইরো না। তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে তুমি বইলো হ্যাঁ আমি সব জানি। এইরকম কিছু একটা বইলো।
মামুনুল হকের স্ত্রী: ঠিক আছে।
মামুনুল হক: আচ্ছা। আসসালামু আলাইকুম।
এমন ফোনালাপ ছাড়াও আটকের পর রিসোর্টে ফেলে আসা নারীর সাথে আরেকটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে । এমন সকল ফোনালাপ, সকল ভিডিও এবং হেফাজতের ফেসবুকের মামুনুল হক, মনির হোসেন কাসেমীসহ নেতৃবৃন্দের ব্রিফিংয়ে নানাভাবে নগ্ন এমন ঘটনা কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালায় । এমন অপচেষ্টা পর সর্বত্র ই সমালোচনা করে প্রশ্ন উঠেছে, ” এখন এই লাম্পট্য নিয়ে কি বলবেন হেফাজত । আর নারীর সাথে কিসের বিশাল টাকার লেনদেন হয়েছে সোনারগাঁওয়ের রিসোর্টে ।









Discussion about this post