বন্দর (নারায়নগঞ্জ) প্রতিনিধি :
বন্দরে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশ না মেনে গণধর্ষনের ঘটনায় মামলা করায় রাজাকার পূত্র মাকসুদ বাহিনীর তান্ডবে জীবনের ভয়ে গ্রামছাড়া ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবার ও স্বজনরা। মামলার আসামির পরিবার প্রকাশ্যে ধর্ষিতা কিশোরীর ঘর এবং স্বজনদের বাড়ি ঘরে লুটপাট চালালেও পুলিশ এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে ভুক্তভোগী ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ।
মধ্যযুগীয় বর্বরতা কায়দায় লুটপাটের ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মুছাপুর ইউপির চিড়ইপাড়া কলোনীতে।
সর্বশেষ শুক্রবারে বিকালে প্রকাশ্যে ধর্ষিতার কিশোরীর মামা রিকশা চালক মো. বাচ্চু মিয়ার ঘরের আসবাবপত্র লুটপাটের পর ধর্ষণ মামলার আসামির বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লুন্ঠিত মালামাল ফেরত পাঠালেও আসামিদের গ্রেপ্তার করেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ শবেবরাত রাতে উপজেলা মুছাপুর ইউপির চিড়ইপাড়া কলোনীতে এক কিশোরকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে একই মৃত শাহজউদ্দিনের ছেলে বাস চালক মো. রকি ও তার চাচাতো ভাই শুকুর আলী আলমগীর। গনধর্ষণের ঘটনাটি বিচার সালিশ না মেনে ধর্ষিতার পরিবার থানায় মামলা করায় ক্ষিপ্ত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাজাকার পূত্র মাকসুদ হোসেন।
গত ২২ মার্চ বিকালে মামলার আসামি মো. রকিকে চিটাগাং রোড এলাকায় দেখে ধাওয়ার করে ধর্ষিতা তরুণীর দুই ভাই শহিদুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম। এ সময় আসামি রকি ট্রাকের ধাক্কায় সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুত্বর আহত হয়। আহত অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন আসামি রকির মৃত্যু হয়। সড়ক দূর্ঘটনায় আহত আসামির মৃত্যুকে পুজি করে রাজাকার পূত্র মাকসুদ বাহিনীর সদস্য ধর্ষণকারি আলমগীর ও নিহত রকি পরিবারের তান্ডবে মারধরের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে গ্রামছাড়ে ধর্ষিতা কিশোরী ও তার পরিবার, দুই মামার পরিবার।
রকির অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর নেপথ্যে এই রাজাকার পরিবারের গভীর চক্রান্ত রয়েছে বলেও পুরো বন্দর এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে । রকির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে পুঁজি করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নানা কুপকৌশল চারিয়ে যাচ্ছে রাজাকার পরিবারের ক্ষমতাধর সদস্যরা ।
পরে ধর্ষিতার পরিবার ও স্বজনদের বাড়ি ঘরের আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে আসামি আলমগীর ও অন্যান্যরা। শুক্রবার বিকালে ধর্ষিতার মামা মো. বাচ্চু মিয়ার ঘরে লুটপাট চালায় ধর্ষণকারি আলমগীর তার পিতা হত্যা ও মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি শুক্কুর আলী, ওয়ারেন্টের আসামি আছমা, জনি, আসলাম ও নিলুফা সহ আরো ৬-৭ জন। ধর্ষিতা পরিবারকে গ্রামছাড়া করে তাদের বাড়ি ঘরে আসামিদের সর্বশেষ লুটপাটের বিষয়টি স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ধর্ষণ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাহাবুব আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লুণ্ঠিত মালামাল ফেরত পাঠিয়ে দেয় ধর্ষিতার মামা বাচ্চুর পরিবারের কাছে। লুণ্ঠিত আসবাবপত্রের মধ্যে ফ্রিজ, টিভি, খাটসহ অন্যান্য ফেরত পেলেও নগদ টাকা ফেরত পায়নি বলে ভূক্তভোগী বাচ্চু মিয়ার অভিযোগ।
ধর্ষিতা কিশোরীর মা শাহিদা বেগম জানান, আমার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর প্রথমে মাকসুদ চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি শুক্কুরের পরিবার ভালো বলে বিষয়টি পরে দেখবেন বলে তাড়িয়ে দেয়। পরে আমি নিরুপায় হয়ে থানায় মামলা করি। থানায় মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাকসুদ চেয়ারম্যান। আসামিদের গ্রেপ্তার না করায় পরিস্থিতি অন্যখাতে নিয়ে আমার পরিবার ও স্বজনদের গ্রামছাড়া করে আসামি ও তার পরিবার। আসামি ও আসামি পরিবারের ভয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্রে বসবাস করলেও আমার মেয়ের ধর্ষণকারি আলমগীর নিজ বাড়িতে অবস্থান করে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। লুটপাটে অংশ নেওয়া অপর আসামি সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত রকির মা আছমা ও তার ছেলে জনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকা সত্বেও পুলিশ গ্রেপ্তার করছেন। এছাড়াও ধর্ষণের ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীকেও গ্রামছাড়া করে রেখেছে তারা।
এ ব্যপারে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি গনমাধ্যমকর্মী পরিচয় পেয়ে ক্ষেপে গিয়ে লাইনটি কেটে দেন। পরে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ধর্ষিতার পরিবার ও স্বজনদের বাড়ি ঘরে আসামি পরিবারের লুটপাটের সত্যতা শিকার করে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহাবুব আলম জানান, ধর্ষিতার স্বজনদের ধাওয়া খেয়ে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত আসামি রকি মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শক্ত অবস্থান নেওয়ায় পুলিশ অসহায় হয়ে পড়েছে। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পুরো নারায়ণগঞ্জে এমন রাজাকার পরিবারের সদস্যদের দৌড়াত্ম এবং নানা অপরাধ কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে শাসক দলের নেতারে ধিক্কার দিচ্ছে আওয়ামীলীগের নেতারা । ওসমান পরিবারের প্রকাশ্য আস্কারায় এই ঘৃন্য পরিবারের অপরাধীরা স্বাধীনতার এতো বছর পরও সকল ধরণের অপরাধ করায় বারবার প্রতিবার প্রতিরোধরে ডাকও দিয়ে যাচ্ছে নগরবাসী ।









Discussion about this post