কাষ্টমস ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা ৩৭ হাজার বোতল বিদেশী মদ ধ্বংস করেছে র্যাব।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত র্যাব-১১’র সদর দপ্তরে এই কর্মসূচিটি পালন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সদ্য যোগদান কৃত র্যাব মহা পরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি জনাব এম খুরশীদ হোসেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক নারায়ণগঞ্জ জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌস, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট এবং জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন)সহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিশাল এই আটককৃত মদের চালান ধ্বংস করা হয়।
এর আগে গত ২৩ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের অভিযানে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধভাবে আমদানিকৃত দুইটি কন্টেইনার হতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬,৮১৬ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মাদকের মূল্য প্রায় ৩৭ কোটি টাকা। অতঃপর এই অবৈধ চালান আমদানী কারবারের সাথে জড়িতদের ঢাকার ওয়ারীস্থ বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান নগদ দেশী এবং বিদেশী মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। উক্ত অভিযানে মোঃ নাজমুল মোল্লা (২৩), মোঃ সাইফুল ইসলাম সাইফুল (৩৪) কে গ্রেফতার করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ জুলাই সকালে বিমান বন্দর এলাকা হতে এই চক্রের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদ (২২) কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বর্ণিত মাদক আমাদানি ও বিপণন এর সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান মোল্লা, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.শামসুর রহমান, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর মোহসিন, র্যাব-১১’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন) শাওন শায়লা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি জনাব এম খুরশীদ হোসেন জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। সেই জিরো টোলারেন্সকে সামনে রেখেই র্যাব মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা পালন করে আসছে। যেখানে মাদক থাকে সেখানে অবৈধ অস্ত্রসহ নারী পাচারের মতো নানা অপকর্ম হয়ে থাকে। কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। প্রত্যেকটি সেক্টরে মাদকের প্রভাব পড়ছে। ডোপটেস্ট করার মাধ্যমে প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টে থেকে শুরু করে শি¶ক পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরো বলেন, মাদকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সমাজের সকলকে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পরিবার, শি¶ক, গণপ্রতিনিধিসহ সমাজের সকল স্টেক হোল্ডারগণকে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশ হতে মাদক নির্মূল সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাই মাদক নির্মূলে সমাজের সকল স্টেক হোল্ডারগণের সচেতনতা বৃদ্ধিসহ আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
২৩ জুলাই (শনিবার) র্যাব-১১ বিশেষ অভিযান চালিয়ে এসব বিদেশী মদ সহ দুইজনকে আটক করার পর বিশাল এই মদ আটকের ঘটনায় সারোদেশে আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্যাপক সাধুবাদের ঝড় উঠে । এমন ঘটনার মূল হোতা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিক বিদেশে পালিয়ে গেলে কৌশলে ফের দেশে ফিরে ৪ আগষ্ট আত্মসমর্পণ করলে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে ৪ সপ্তাহের সময় দিয়ে আগাম জামিন প্রদান করে । উচ্চ আদালত কর্তৃক ৪ সপ্তাহের জামিনের পর আরো ১০ সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও বিশাল এই মদের মামলা মূল আসামী চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম আইনের ফাঁক গলিয়ে এখনো রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে । আর এরই মধ্যে মদের মামলার এই কুখ্যাত আসামীর শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে আনা বিদেশী ৩৭ কোটি টাকার বিশাল মদ ধ্বংস করে র্যাব ।
একদিকে র্যাবের এমন অভিযান কে পুরো দেশে যেমন সাধুবাদের ঝড় উঠে ঠিক তেমনি আসামী সেই কুখ্রাত অপরাধী মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিক উচ্চ আদালতে জামিন নিয়ে ফের নানা নাটকীয়তা করেই যাচ্ছে । নিম্ন আদালত থেকে বারবার জামিন নিয়ে ট্যাগ ব্যাক করার গুঞ্জনে অনেকের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে । একই সাথে ৩৭ কোটি টাকার মদ ধ্বসের ঘটনায় পুরো নগরীতে নান গুঞ্জন, আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই বলেছেন এতা বড় অপাধ করে বিশাল এই মদ ব্যবসার হোতা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম এখনো বীরের বেশে দাপড়িয়ে বেড়াচ্ছে কেমন করে ? আবার ফুলের মালা গলায় দিয়ে মটর সাইকেলের বহর নিয়ে শো ডাউন করে আতংকের সৃষ্টির পর কেমন করে চষে বেড়াচ্ছে সর্বত্র ? কে আছে এমন অপরাধীর নেপথ্যের খুঁটির জোর ?









Discussion about this post