দীর্ঘদিন যাবৎ স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ মহাপরিদর্শকের কার্যালয় থেকে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে, ‘কোন অবস্থাতেই দেশের কোন থানায় ক্যাশিয়ার নামক কোন ব্যক্তি থাকবে না । এবং কোন পুলিশ সদস্য এই ক্যাশিয়ার নাম করে ব্যবসায়ী নামধারী অসাধু কর্মকান্ডের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোন ধরণের চাঁদাবাজি করতে পারবে না।’
এমন কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও নারায়ণগঞ্জের প্রায় প্রতিটি থানা এবং গোয়েন্দা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ইন্সপেক্টেরদের নাম ব্যবহার করে অপরাধীদের কাছে থেকে মাসে মাসে মাসোয়ারার নাম করে ক্যাশিয়ারী করে যাচ্ছে পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ ।
আর থানার ক্যাশিয়ারের নাম করে এমন চাঁদাবাজির মহোৎসবের ঘটনায় কোন কর্তাদের কাছ থেকে জানতে চাইলে সকলেই এক বাক্যে বলেন, “আমার দপ্তরে কোন ক্যাশিয়ার নাই । এমন অভিযোগে পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। কার কাছে থেকে চাঁদা নেয় এমন লোকজনকে অভিযোগ দিতে বলেন অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে !”
এমন হাস্যকর কৌশলী মন্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের দায় এড়িয়ে ফের চাঁদাবাজির মহোৎসব চলতেই থকে সারা বছর জুড়েই । এমন এক ক্যাশিয়ারের চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর হাতে। (যার কিছু রেকর্ড সংরক্ষণে রয়েছে)
তথ্য থেকে জানা যায়, বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমানের বডিগার্ড ছিলেন কন্সষ্টেবল আবদুল হাই । তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সিদ্ধিরগঞ্জের তেলচোর আশরাফের কাছ থেকে চোরাই তেল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাাঁদা আদায় করে আবদুল হাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দিতো। একই সাথে এই আশরাফ থানার ওসি ও ক্যাশিয়ারের নাম ভাঙ্গিয়ে সকল তেলচোরদের কাছে থেকে বিশাল চাঁদা আদায় করে কখনো ডিআইজি কখনো অতিরিক্ত ডিআইজির নাম ব্যবহার করতো । একই সাথে সিদ্ধিরগঞ্জের অসংখ্য চুনা ফ্যাক্টরী, সাবান ফ্যাক্টরী, কয়েল ফ্যাক্টরী, খাদ্য গোডাউন থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেতো। যার পরিমাণ প্রায় ৬/৭ লাখ টাকা।
সেই ওসি মশিউর রহমান সিদ্ধিরগঞ্জ বদলী হবার পর কন্সষ্টেবল আবদুল হাই একই সাথে নানা অপরাদের কারণে বদলী হয়ে গেলেও ক্যাশিয়ার নামক কর্মকান্ড আর বন্ধ হয় নাই। ধারাবাহিকভাবে এখন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির নাম ভাঙ্গিয়ে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন আরেক কন্সস্টেবল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বডিগার্ড ফয়সাল ।
এমন গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি সিদ্ধিরগঞ্জে ওসি থাকাকালে কোন ক্যাশিয়ার বা পুলিশেল নামে চাঁদাবাজি হতে দেবো না ।
ওসির এমন কঠোর বক্তেব্যের পরও কন্সষ্টেবল ফয়সাল নিজেকে ক্যাশিযার হিসেবে পরিচয় দিয়ে নগ্ন কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী বলেন, “ব্যবসা করতে গেলে কিছু দই নাম্বারী তো করতে ই হয় । আরে এই দুই নম্বরী করতে গেলে পুলিশকে ম্যানেজ করেই করতে হয়। আগে ক্যাশিয়ার ছিলো আব্দুল হাই। এখন নয়া ক্যাশিয়ার ফয়সাল। প্রতি মাসেই ক্যাশিয়ার ওসি সাহেবের বডিগার্ড ফয়সালকে মাস শেষে কিছু টাকা দিতেই হয় । মাস শেষে বিকাশে কিংবা ভিন্ন উপায়ে টাকা না পাঠালে ফয়সাল থানায় ডেকে নিয়ে মারধর আর অকথ্য বাষায় গালিগালাজ করে । হাজতে ডুকাইয়া মামলা দিয়ে জেল খাটানোরও হুমকি দেয়। তাই বাধ্য হয়েই দুই নম্বরী কইরা ক্যাশিয়ার ফয়সাল রে মাস শেষে মান্থলি দিতে বাধ্য হই।”
জেলার প্রায় প্রতিটি থানায় ক্যাশিয়ারদের এমন দৌড়াত্ম থামাতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে কয়েকজন কর্মকর্তা ।









Discussion about this post