শেষ পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী বোস কেবিন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা – সমালোচনা ও বিক্রি করে পুরোনো মালিক তারক বোস ওরফে বোম্বাই দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন এমন মতবিরোধপূর্ণ গুঞ্জনের অবসান ঘটেছে । একই সাথে এই ১০৩ বছরের পুরনো বোস কেবিনের মালিকানা বিক্রি হওয়ায় শ্রমিকদের শ্রম আইন মোতাবেক ২৬ জন শ্রমিককে ৪০ লাখ টাকা প্রদান করে নির্মল দাস প্রমাণ করেছেন তিনি এই বোস কেবিন কিনে নিয়েছেন।
হোন্ডির মাধ্যমে দেশের এই ঐতিহ্যবাহী বোস কেবিন বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা পাচার করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরেন বিক্রিত এই বোস কেবিনের নতুন মালিক মালিক নির্মল দাস। প্রায় ৩০/৪০ বছর যাবৎ এই বোস কেবিনে চাকরী করা শ্রমিকরা তাদের শ্রম আইনে তাদের পাওনার জন্য কয়েক মাস যাবৎ আন্দোলন ছাড়াও নানাভাবে বোস কেবিনের পুরানো মালিক তারক বোস ও তার মায়ের কাছে নানাভাবে অনুনয় বিনয় করে আসছিলেন।
একদিকে বোস কেবিন বিক্রির বিষয়টি ভারতে অবস্থান করে পুরোপুরি অস্বীকার করে আসছিলেন তারক বোস। তারক বোসের মা একই ভাবে সকলের সামনে বোস কেবিনে দাড়িয়ে বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেন। অথচ চতুর নির্মল দাস বোস কেবিন কিনে নিয়ে কোটি কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে বেকায়দায় পরে নগরবাসীর কাছে জানান দেন তিনি বোস কেবিন কিনে নিয়েছেন।
বোস কেবিনের ৩০/৪০ বছরের পুরাতন কয়েকজন বাবুর্চি, মেসিয়ার, কারিগর, টি বয়, গ্লাস বয়সহ ২৬ জন কর্মচারী তাদের পাওনা আদায়ের জন্য কলকারখানা অধিদপ্তরেসহ বিভিন্ন দপ্তর ও রাজনেতিক প্রভাবশালীদের দ্বরে দ্বারে অভিযোগ করেন ।
এমন বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বোস কেবিনের ২৬ জন শ্রমিকে পাশে দাঁড়িয়ে শ্রমিকদের নিয়ে আইনগত সহায়তা এবয় আন্দোলন চালিয়ে আসছেন । এমন আন্দোলনের পর শ্রমিক নেতা এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল কে সদ্য বিদায়ী নারায়ণগঞ্জ সদর থানার বিতর্কিত ওসি আনিচুর রহমান কে দিয়ে নানাভাবে আন্দোলন থামাতে হুমকি সহ পুলিশ দিয়ে হয়রানীও করে চতুর গার্মেন্টস ব্যবসার অন্তরালে হুন্ডি ব্যবসায়ী নির্মল দাস । একই সাথে পুলিশ দিয়ে ম্যানেজার সুজিতকে পুলিশের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে থানায় হুমকিও দেয়ার ব্যবস্থা করেন এই নির্মল ও তার শেল্টারদাতারা ।
বোস কেবিনের কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিতে নানা টালবাহানার পরও নগরীর কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের নেপথ্যে ব্যবহার করে অপতৎপরতার পর ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ইসমাইল ল’ চেম্বারে বোস কেবিনের নতুন মালিক নির্মল দাস এবং সকল কর্মচারীদের উপস্থিতিতে এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইলের ২৬ জন শ্রমিককে ৪০ লাখ টাকায় আন্দোলন না করার শর্তে সমাঝোতা চুক্তি সম্পন্ন করে ।

এমন ঘটনায় নগরীর অনেকেই বলেন, “সহজ সরল তারক বোস ওরফে বোম্বাইয়ের স্ত্রী মিতু বোস অসুস্থ্যতার কারনে দীর্ঘদিন ভারতের কলকতায় অবস্থান করায় এবং আর্থিক অনটনের সুযোগ নিয়ে নির্মল দাস প্রায় ঋণের প্রলোভন দিয়ে আসছিলো। প্রায় ই ঋণ দিয়ে তারক বোসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে নির্মল দাস। বোস কেবিন স্বল্পমূল্যে কিনে নিতে পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা এ্বং এমন চতুরতা করে আসছিলো নির্মল দাস । এই বোস কেবিন কিনে নিতে নির্মল দাস ব্যবহার করে তারক বোসের কয়েকজন ঘনিষ্ট জনকে। একই সাথে নেপথ্যে থেকে প্রভাবশালী একটি চক্র নানাভাবে পরিকল্পনা চালিয়ে আসছিলো । সেই মোতাবেক তারক বোসকে এই বোস কেবিন কিনে নিয়ে কোটি কোটি টাকা টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করলেও এই ৪০ লাখ টাকা অপরিশোধিত রাখেন চতুর নির্মল । সেই টাকা দিয়েই বোস কেবিনের শ্রমিকদের আন্দোলন-বিতর্কের যবনিকাপাত ঘটানোর চেষ্টা করলেন নির্মল দাস । এমন ৪০ লাখ টাকা শ্রমিকদের মাঝে হস্তান্তরের পর বোস কেবিনের ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ‘ বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ ।









Discussion about this post