“দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে একদিকে যেমন প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি সংযোগ থেকে লাখ লাখ টাকা অপরদিকে প্রতি মাসে মাসে তিতাসের বিল বাবদ নেয়া হচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। এমন কান্ড ঘটিয়ে স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী চক্র যেমন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন তেমনি তিতাসের অসাধু প্রায় সকল কর্মকর্তা কর্মচারী যেন একেকজন তিতাসের মহাজের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে গ্যাস বাণিজ্য। আর এমন প্রকাশ্য অপরাধ ধামাচাপা দিতে তিতাসের সকল চক্র প্রতি মাসে দুই তিন দফা অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্নের নাটক মঞ্চায়ন করেই যাচ্ছে ।অবৈধ সংযোগের কারণে দফায় দফায় এই কয়েল কারখানায় অভিযান চালায় নানা সংস্থা । কখনো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবার কখনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো কখনো র্যাবের সাজোয়া যানবাহন নিয়ে যেন যুদ্ধ করতে আসা বাহিনীর মাধ্যকে সকল অপরাধ উদ্ধর করে দেশ স্বাধীন করে ফেলছে এমন অবস্থায় চালানো হয় লোক দেখানো অভিযান। এরপর আবার সেই কারখানায় সেই অভিযানকারী কর্তাদের সাথে আতাঁতের পর দেয়া হয় অবৈধ সংযোগ। এভাবেই চলছে এই অভিযান।
এমন অভিযানের পর আবার এই কারখানায় দেয়াও হবে অবেধ সংযোগ। তা আর দেখবে কে ? এমন মন্তব্য করেছেন তিতাসের অভিযানে সাথে থাকা একজন কর্মকর্তা । তিনি বলেন আমি খুবই অসহায় । প্রতি মাসে কম করে হলেও কোটি টাকার গ্যাস চুরি করে এই অসাধুরা । আর জরিমানা করলো কত ? ম্যাজিস্ট্রেটগণদের চোখে ধুলো দিয়ে এই নাটক মঞ্চায়ন করে তিতাসের এই নাটকবাজরা ! এমন নাটক ও অপরাধের সাথে থাকবো না আমি এমন কথা তো বলাও অনেক দূরের বিষয়। যদি বুঝতেও পারে আমি এই অপরাধগুলি পছন্দ করি না তাতেই আমার বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে।”
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে তিনটি মশার কয়েল কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষ। একই সঙ্গে দুটি কারখানাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (১৯ মে) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি ও মতিন সড়ক এলাকায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইলোরা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় তিন কারখানা থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন চারটি মোটরসহ বিপুল পরিমাণ পাইপ, রাইজার ও বার্নার জব্দ করা হয়।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় পরিচালিত এ অভিযানে তিতাসের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মুস্তাক মাসুদ মো. ইমরানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শেষে মুস্তাক মাসুদ মো. ইমরান বলেন, ওই এলাকায় প্রভাবশালী দালাল চক্রের মাধ্যমে আলম মশার কয়েল, ডিকে বুস্টার মশার কয়েল ও কামাল মশার কয়েল নামে নিম্নমানের তিনটি কয়েল কারখানায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত উৎপাদন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে পাঁচবার এ তিনটি কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তারপরও একই পন্থায় বারবার সংযোগ নিয়ে কারখানা পরিচালিত করা হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, কারখানা তিনটি ছয় মাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার গ্যাস অবৈধভাবে ব্যবহার করেছে। পরবর্তীতে যাতে আর অবৈধ সংযোগ নিতে না পারে সেজন্য তিতাসের মূল বিতরণ সংযোগ থেকে অবৈধ সংযোগস্থলে সিমেন্ট ঢালাই দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। আলম ও ডিকে বুস্টার কারখানা দুটির মালিকদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত তিন কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।









Discussion about this post