চাষাড়ার আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলা মামলার অন্যতম চার্জসীটভূক্ত আসামী শওকত হাসেম শকু। এমন অভিযোগ ছাড়াও শকু তার পরিবার নিয়ে নগরীতে রয়েওেছ নানা গুঞ্জন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
একসময় বিএনপির তুখোড় নেতা হিসেবে পরিচিত থাকলেও প্রায় এক যুগের মতো দলীয় কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয় এবং বিএনপি থেকে বহিস্কার হলেও কোটা বিরোধী নাশকতায় তিনি নগরীর ডন চেম্বার খানপুর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে নিজ মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে দেখা গেছে ।
তবে তিনি নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সঙ্গে তার সখ্যতা ও সক্রিয়তা ওপেন সিক্রেট। যা তিনি ওসমান পরিবারের সাথে সখ্যতা রাখতে পেরে নিজেকে ধণ্য মনে করে বক্তব্যও দিয়েছেন প্রকাশ্যেই। এ কারণে বিএনপি নেতাকর্মীরা আড়ালে আবডালে এবং প্রকাশ্যেও শওকত হাসেম শকুকে ওসমান পরিবারের দালাল বলেও আখ্যায়িত করেন।
এদিকে শওকত হাসেম শকুও কিছুদিন পূর্বে একটি বক্তব্যে বলেছিলেন, তাকে কেউ ওসমান পরিবারের ‘দালাল’ বললে তিনি গর্বিত হোন।
সূত্র বলছে, বিগত ২০১২ সালের পূর্বে শওকত হাসেম শকু বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে এরপর থেকে বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমা ও পুলিশী হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে ওসমান পরিবারের বশ্যতা স্বীকার করে নেন তিনি। এই পরিবারের বিশ্বস্ত হওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন এতদিন তিনি করেও গিয়েছেন। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনেও তিনি এই পরিবারের মেজ ছেলে সেলিম ওসমানের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। এ কারণে বিএনপি তাকে সকল পদ থেকে বহিষ্কারও করে।
এর আগে ওসমান পরিবারের বিভিন্ন সভা সমাবেশেও কর্মী সমর্থক সমেত মিছিল নিয়ে তিনি একাধিকবার উপস্থিতও হয়েছিলেন। এমনকী সেলিম ওসমানের সভা মঞ্চেও তিনি উঠেছিলেন এবং বক্তব্যও রেখেছিলেন। এ নিয়ে খোদ বিএনপির নেতাকর্মীরাও ব্যাপক সমালোচনা করেছিলেন এই কাউন্সিলরকে নিয়ে।
সূত্র বলছে, মামলা-হামলা থেকে রক্ষা পেতে নিজ দলের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করে ওসমান পরিবারের বিশ্বস্ত হতে একযুগ পার করেও এই পরিবারের বিশ্বস্ত হতে পারেননি তিনি। ফলশ্রুতিতে এই পর্যায়ে এসে এই পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শীতল ট্রান্সপোর্টের ডিপোতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। গেল ২৪ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলায় শীতল ট্রান্সপোর্টের পরিচালক অনুপ সাহা অভিযোগ করেন, ১৯ জুলাই সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতিকারি শীতল ট্রান্সপোর্টের জালকুড়িস্থ ডিপোতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ২৪টি শীতল বাস পুড়ে যায়। এই ঘটনায় ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকার মতো তাদের ক্ষতি হয়েছে।
মামলার বাদীর দাবি, গিয়াসউদ্দিনসহ ৯৫ নামীয় ব্যক্তিসহ আরও অনেক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ওই দিন অগ্নিসংযোগে সম্পৃক্ত। তাদের মধ্যে ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকুও ছিলেন।
এদিকে প্রায় একযুগ সময় ধরে কাউন্সিলর শকু যে পরিবারের বশ্যতা স্বীকার করে নিজ দলের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিলেন, সেই পরিবারই শেষ পর্যন্ত তাকে মামলার আসামি করেছে। এখন এই পরিস্থিতিতে এই কাউন্সিলরের ভূমিকা কী হবে এমন প্রশ্নের উদ্রেক এখন সবার মাঝে।
আবার নগরীতে ব্যাপক চাউর রয়েছে একদিকে ওসমান পরিবারের সাথে দালালী করে শওকত হাসেম শকু নিজেকে নগরীর কর্তা হিসেবে প্রমাণ করলেও এবার এই নাশকতায় একটি প্রভাবশালী গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করে মোটা অংকের অর্থনেতিক সুবিধা নিয়ে পিকেটারদের দিয়ে অগ্নিসংযোগ ও আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
শওকত হাসেম শকুর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, কোটা বিরোধী আন্দোলনে এই কাউন্সিলরের সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে তার এবং তার কয়েকজন অত্যান্ত ঘনিষ্ঠজনদের মুঠোফোন যাচাই করলেই বেড়িয়ে আসবে তার নাশকতার সম্পৃক্ততার প্রমাণ।
যার একটি রেকর্ড পােওয়া গেছে।









Discussion about this post