নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী । যিনি বিএনপির বিতর্কিত নির্বাচনে এমপি হলেও দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির পাশে নেই সাবেক এই এমপি। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে কিং মেকার হিসেবে আখ্যায়িত করলেও প্রবীনদের অনেকেই এই মোহাম্মদ আলীকে ‘নয় লাইখ্যা আলী বলেই ডাকেন । আর এই ব্যক্তিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের সাথেই উঠবস করতে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত।
তবে তাকে আবারও বিএনপি নেতা হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে। শুধু কী তাই ? তার ভাতিজা এবং দুই নাতিকে করা হয়েছে এমপি শামীম ওসমানের মালিকানা শীতল পরিবহনে অগ্নি-সংযোগ মামলার আসামী। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গণে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্পপতি মোহাম্মদ আলী। ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে তাকে আর বিএনপির পাশে দেখা যায়নি। বিএনপির সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেননি বলেও সর্বজন স্বীকৃত হয়ে আছে। উপরন্ত তাকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পাশে দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সাথেও তার সখ্যতা বেশ দৃঢ় বলে বারংবার আলোচনায় এসেছে। তাদের নির্বাচনি কার্যক্রম, সামাজিক ও পারিবারিক আচার অনুষ্ঠানেও সক্রিয় দেখা গেছে মোহাম্মদ আলীকে।ওসমান পরিবারের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক থাকলেও এবার এমপি শামীম ওসমানের ব্যক্তিমালিকানা শীতল বাস পোড়ানো মামলায় মোহাম্মদ আলীর ভাতিজা এবং দুই নাতিকে আসামী করায় অনেকের চোখ কপালে উঠেছে। চলছে তুমুল আলোচনা।
তথ্য মতে, কোটা ইস্যুতে ছাত্র আন্দোলন ঘীরে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুড়ি এলাকায় অবস্থিত এমপি শামীম ওসমানের মালিকানা শীতল পরিবহনের পার্কিং স্ট্যান্ড রয়েছে। গত ১৯ জুলাই রাতে শীতল পরিবহনের ২৪টি বাস পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত বলে শুরু থেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পুলিশের অভিযোগও একই দিকে।
ওই ঘটনায় গত ২৪ জুলাই ফতুল্লা মডেল থানায় বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শীতল পরিবহনের পরিচালক অনুপ সাহা বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। অনুপ সাহা এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, মামলার এজাহারে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীকে বিএনপি নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। দায়েরকৃত এজাহারে আসামীদের তালিকায় উল্লেখ করা হয়, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলীর ভাতিজা মো. রিপন (সাইদুর রহমান রিপন) ও মোহাম্মদ আলীরদুই নাতি অভি এবং প্রান্ত। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলীর ভাতিজা রিপনকে ৬১ নম্বর এবং দুই নাতি অভি ও প্রান্তকে যথাক্রমে ৬২ ও ৬৩ নম্বর আসামী করা হয়েছে।
ওসমান পরিবারের সাথে এমন সু-সম্পর্ক থাকার পরও শামীম ওসমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শীতল পরিবহনের ২৪টি বাস পুড়িয়ে দেয়ার সাথে মোহাম্মদ আলীর ভাতিজা ও নাতিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনাও।









Discussion about this post