‘আমরা যখন গত ষোল বছর আন্দোলন সংগ্রাম করছিলাম তখন যারা শামীম ওসমানের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তার ছেলে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ইন্টারনেট, ভূমিদস্যুতা, তেল চুরি করে অর্থ সম্পদে বলিয়ান হয়েছে। এখন সেই তারাই ৫ আগস্ট থেকে এই ফতুল্লায় লুটপাট, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করছে । তাদের কবল থেকে ছোট দোকানও রেহায় পাচ্ছে না। এদের সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ।’
এভাবেই শনিবার (১৪ সেপ্টম্বর বিকেলে জালকুড়ি কড়ইতলায় কাজী বাড়ি মাঠে কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগেে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, শামীম ওসমান হচ্ছে কাপুরুষ। সে হচ্ছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর। সে ২০০১ সালের মতো এবারও তার নেতাকর্মী রেখে বোরখা পরে পালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন আওয়ামী লীগ থেকে সুবিধা নিতে দলের চরম দুঃসময়ে দল থেকে সরে গিয়ে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছে, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী করেছে। সে নাকি এখন আবার বিএনপিতে ফিরতে চায়। ভুলেও না। সে এখন পচা মাল। এই মাল এখন আর বিএনপি খায় না।
ষড়যন্ত্র করে যারা সভা বানচালের চেষ্টা করেছেন তাদেরকে বিড়াল হিসেবে আখ্যা দিয়ে গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, ‘আমি বিগত দিনে সিংহের গর্জনকেই ভয় পাই নাই সেখানে বিড়ালের খেচখানিতে বিড়াল ছানাকে ভয় পাবো কেন। আমি গডফাদার সিংহের সঙ্গে লড়াই করেই টিকে আছি। এখন কিছু বিড়াল আমাকে খামচাতে চায়, ভয় দেখাতে চান সাবধান হয়ে যান। বিগত দিনে যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ব্যবসা বাণিজ্য করে অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন তারাই এখন বিএনপির নেতা সেজে নানা ধরনের লুটপাট করে যাচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে চিহ্নিত। তাদের কারণে আজ বিএনপি বিতর্কিত হচ্ছে। যারা অপরাধ করেছে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। যদি আমার নেতাকর্মীরা তাদের মাফ করে তাহলে আমি ভেবে দেখবো’।
তিনি বলেন, গত তিন দিন ধরে একটা পক্ষ নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল সভা বানচাল করার জন্য। আমি প্রশাসনকে বলেছি, আমি সভায় যাবো যদি কারো বাবার ক্ষমতা থাকে আমাকে বাধা দিতে বলবেন। আমার পুলিশ লাগবে না। আমার নিরাপত্তা লাগবে না। আমার জন্য আমার নেতাকর্মীই যথেষ্ট সেসব সন্ত্রাসীদের রুখে দিতে। আর আমার জন্য আমার আল্লাহ আছে।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, প্রশাসনকে সবময় সহযোগিতা করতে হবে। ৫ তারিখ থেকে ফতুল্লায় যারা লুটপাট, ভাঙচুর চালিয়েছে তারা কারা আপনারা জানেন। তাদের তালিকা প্রশাসনকে দিবেন। না পারলে আমাদের দিবেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। আমি গিয়াসউদ্দিন অন্তত তাদেরকে ক্ষমা করবো না। তারা মীরজাফার। তারা দলের সঙ্গে বেঈমানি করেছে, নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছে। নৌকা মার্কার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক হতে পারে না। আমি তাদের মুখে থু দিই।
তিনি বলেন, এখানে শ্রমিক দলের সভাপতি আছেন। তিনি বলেছেন কিছু মানুষ এখানে শ্রমিক দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। সেই তারাই আজকের সভা বানচাল করতে চেয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সন্ত্রাসী। চাঁদাবাজ।
কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনিপর সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাড. মাহমুদুল হক আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমনসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আরো বলেন, সেদিন ফতুল্লায় বিএনপি একটি শান্তির মিছিল বের করলে একদল চাঁদাবাজ সেই মিছিলে হামলা চালায়িছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করেছে। এরা গত ৫ আগস্ট থেকে ব্যাপকভাবে লুটপাট ভাঙচুর চাঁদাবাজি করছে। তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী।









Discussion about this post