শহরের ৩শ শয্যা বিশিষ্ট (খানপুর) হাসপাতালে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডার জমা দিতে দেয়নি ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার পর এবার একটি সার্জিক্যাল প্রতিষ্ঠান এমন অভিযোগ তুলেছে।
২৩ ডিসেম্বর (সোমবার) শহরের খানপুর হাসপাতালে এম এস আর সামগ্রী সংক্রান্ত টেন্ডার জমা দিতে গেলে এমন ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জের সদর ও খানপুর হাসপাতালের পুরো বিষয়টি একটি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অভিযোগ করেছে।
সূত্র মতে জানা যায়, ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের এম এস আর সামগ্রী সংক্রান্ত একটি দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত গণমাধ্যমে। ২৩ ডিসেম্বর ওই টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল।
ওই দিনের ঘটনায় সার্জিক্যাল প্রতিষ্ঠানের এক মালিক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানান, ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর হাসপাতালে এম এস আর সামগ্রী সংক্রান্ত দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। ওই দরপত্রের শিডিউল ক্রয় করার জন্য গত ৩০ নভেম্বর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসারের কাছে যাই। সেখানে গেলে তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানান।’
এমন ঘটনার পরে কোনো এক নেতাকে ডেকে এনে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেও তবে আমি তাকে চিনতে পারিনি, নামও মনে নেই।
তিনি বলেন, এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসার এমনটি বুঝানোর চেষ্টা করে যে পুরোনোদের বাইরে টেন্ডার অন্য কেউ জমা দিতে পারবে না, এসব কথা বলে তিনি আরও বলেন, ‘শিডিউল কিনতে হলে ডিসি অফিস থেকে কিনতে হবে।’
ওই সূত্র আরো বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতাল থেকে কেনার সুযোগ রয়েছে। এরপর ফের ডিসি অফিস হয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হলে সেখানে হাসপাতালের হিসাব রক্ষক হাসান হাবিব (পিএ সিদ্দিকের ভাই) শিডিউল লিখতে গেলে নানাভাবে টালবাহানা শুরু করে। অবশেষে নানা ভোগান্তির পরে শিডিউল ক্রয় করি।
এরপর ২৩ ডিসেম্বর টেন্ডার জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শহ্যা হাসপাতালের গেইটে প্রবেশ করতেই হাসপাতালের হিসাব রক্ষক হাসান হাবিবসহ তার আশেপাশের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতেও দেখি। এরপরে ওই লোকজন আমার কাছে এসে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যেতেও হুমকি দেয়।
এই ব্যবসায়ী আরো বলেন, ওই সময় হাসপাতালের ভিতরে তারা জ্যাকেটের ভেতরে পিস্তল সাদৃশ্য কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করে। তারা তখন বলছিল, আপনি বিপদে পড়ে যাবেন এখান থেকে চলে যান। সেখানে আমার মতো আরও অনেকে ভয়ভীতির কারণে টেন্ডার জমা দিতে পারেন নাই। এরপরে খোজ নিয়ে জানতে পারি সেখানে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট আছে যারা জাপানের অনুদানে নির্মিত এই খানপুর হাসপাতালের উদ্বোধনের পর থেকেই জিম্মি করে রেখেছে। বিএনপির শাসনামলে বিএনপির নেতাদের আর আওয়ামী লীগের শাসনামলে আজমেরী ওসমানসহ ওসমান পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে তুষ্ট করেই সিন্ডিকেটটি আংগুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। যারা দেশে ও বিদেশে বসে এই হাসপাতালের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে বাইরের লোকজন সেখানে টেন্ডার জমা দিতে পারে না।
‘খানপুর হাসপাতালে টেন্ডার জমা দিতে না পেরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টেন্ডার জমা দিতে যাই। সেখানে গিয়ে আরও বিপাকে পড়েছি। সেখানে ডিসি অফিসের কার্যালয়ের ভবন থেকে এক লোককে কান্না করতে করতে নিচে নেমে আসতে দেখি।’ এমন চিত্রের তথ্যও তুলে ধরেন এই ব্যবসায়ী।
এই ব্যবসায়ী আরো জানান, খোজ নিয়ে আরো জেনেছি, ওপরে একদল লোক ধাক্কা-ধাক্কি করে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তাকে টেন্ডার জমা দিতে দেয় নাই। এমন চিত্র দেখে Start ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে আসতে বাধ্য হই ।
এসময় আশেপাশের লোকজন জানান, এখানে নির্দিষ্ট কিছু লোক ও প্রতিষ্ঠান টেন্ডার জমা দিতে পারবে । আর সেই সিন্ডিকেটের লোক হিসেবে খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিজে, হিসাব রক্ষকসহ পুরানো সেই সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে।
এমন অভিযোগ অস্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবুল বাসার গণমাধ্যমকে জানান, এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আসে নাই। এবার ৪৯টি টেন্ডার জমা পড়েছে। টেন্ডার জমাদানের দিন সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিল। কেউ কাউকে ভয়ভীতি দেখানোর কোনো ঘটনা ঘটে নাই। সিন্ডিকেটও এখানে নেই।
এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আনীত অসংখ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন আবুল বাসার।
এছাড়াও হিসাব রক্ষক হাসান হাবিব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টেন্ডার জমা দিতে আসা অনেক লোকের সঙ্গে তার কথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের লোক হওয়ার সুযোগ নাই বলেও জানান আবুল বাসার।









Discussion about this post