সেই চিহ্নিত ভূমিদস্যু ওসমানীয় সাম্রাজ্য অর্থাৎ শ্যালক টিটুর অন্যতম ক্যাশিয়ার বাসের হেলপার থেকে শত শত কোটি টাকার মালিক এস এম রানাকে আবারো রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
আওয়ামীলীগের শাসনামলে গডফাদার শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহাম্মেদ টিটুর পার্টনার খ্যাত এই এসএম রানার বিরুদ্ধে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতের বিচারক।
আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জর সদর মডেল থানায় দায়ের করা ৯(৯)২৪ নম্বরের বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলায় পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে । যুক্তি তর্ক ও শুনানীর পর আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
৫ আগস্টে কুখ্যাত গডফাদার শামীম ওসমান তার পরিকবার ও শ্যালক টিটুসহ সকল অপরাধীরা পালিয়ে গেলেও পালাতে না পেরে এস এম রানা ঢাকায় বিসিবির একজন কর্মকর্তার শেল্টারে অবস্থান নেন। এরপর সুযোগ মতো ২০ ফেব্রুয়ারী দুবাইতে অনুষ্টিতব্য ভারত বাংলাদেশের খেলার টিকেট সংগ্রহ করে পালাতে গিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি এস. এম রানা কে আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এরপর দুবাইতে খেলা দেখার পরিবর্তে ২০ ফেব্রুয়ারি পিবিআই একটি হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর পর কারাগারে ঠাঁই হয় রানার । ওই মামলায় তাকে আদালতে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
ঘটনার বিষয়ে পিবিআই সূত্র থেকে জানা যায়, এসএম রানা একজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক, গডফাদার শামীম ওসমান ও তার শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর ছত্রছায়ায় হত্যা, গুম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, জমি দখল সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল রানা।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ১৯ জুলাই তারিখে গডফাদার শামীম ওসমান ও তার শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুদের সাথে এসএম রানা নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে থেকে ছাত্র জনতার ওপর গুলি ও হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। এসএম রানা ছাত্রদের উপর হামলা করার জন্য শতশত আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে একত্রিত করে আশ্রয় দিয়েছিল এবং ছাত্রদের উপর হামলা করার জন্য অস্ত্র, গোলাবারুদ, রাম-দা সহ বিভিন্ন মরণাস্ত্র সরবরাহও করেছিলো এই রানা।
একটি ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় ১৯ জুলাই ২০২৪ তারিখে এসএম রানা ঘটনার দিন সাদা পাঞ্জাবী, পায়জামা ও মুখে সাদা মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থেকে ছাত্র হত্যায় নেতৃত্ব প্রদান ও হামলা চালাচ্ছিল। ১৯ জুলাইয়ের সেই হামলায় নয়ামাটি এলাকার ৬ বছরের শিশু রিয়া গোপ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। রিয়া গোপ হত্যাকান্ডের সাথেও জড়িত শামীম ওসমান ও এসএম রানা তাদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলার কারণে মারা যায় নিষ্পাপ ওই শিশু।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহ-সভাপতি থাকাকালীন সময়ে সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটুর সহযোগীতায় কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এই রানার বিরুদ্ধে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছিল এই এস.এম রানা গং। ৪২ লাখ টাকার কার্টুনসহ এই রানা আটক হলেও তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক শামীম ওসমান সেলিম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা এবং শ্যালক তানভীর টিটুর জোড়ালো তদ্বিরে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন এই রানাকে। এমন ঘটনায় খোদ জেরা প্রশাসক কার্যালয় ও দুদকের কবল থেকে ছাড়া পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এই রানা।
এই এসএম রানা এখন নানা পন্থায় যত টাকাই লাগুক এই হয়রানী থেকে মুক্তি পেতে জোড়ালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নানা কায়দায়।









Discussion about this post