অটোরিকশার স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি ও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় এবার বিএনপির বহিস্কৃত নেতা হান্নান সরকার ও তার বাহিনীর ছুরিকাঘাতে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন পান দোকানী কুদ্দুস মিয়া (৬০)।
আজ শনিবার (২১ জুন) রাত নয়টায় বন্দর রেল লাইন এলাকায় তার সাবেক কাউন্সিলর ও বহিস্কৃত বিএনপি নেতা হান্নান সরকারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী এমন হামলা চালায়।
হান্নান সরকার নেতৃত্বে এ হামলায় জুয়ারি বাবু, মাদকসেবী মো বাবু এবং মেহেদীর ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি আঘাতে আবদুল কুদ্দুস (৬০) মাটিতে লুটিয়ে পড়লে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
গুরুতর যখম কুদ্দুস মিয়াকে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত ২টা পর্যন্ত হামলায় ৮ জন আহতের পর আজ শনিবার রাত ৯টায় হান্নান সরকারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আরো কয়েকজন এলাকাবাসী ও পথচারী আহত করে বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই।
এসময় এক প্রত্যক্ষদর্শী আরো জানান, বিএনপি বহিস্কৃত নেতা স্থানীয় সন্ত্রাসী ও ওসমানীয় দালাল সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার সহযোগী সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে রাত আটটা থেকেই মহড়া শুরু করে। এরপর হান্নানের লোকজন ও এলাকাবাসীর মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও বন্দর বাসস্ট্যান্ডের অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপ—বাবু-মেহেদী ও রনি-জাফর গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনা চলছিল। শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুইটি গ্রুপ বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের অনুসারী হলেও এই সংঘর্ষে তিনি বাবু-মেহেদী গ্রুপের পক্ষ নিয়েছিলেন। রনি-জাফর গ্রুপের সদস্য পারভেজের বাবা আবদুল কুদ্দুস চা খেতে বন্দর স্ট্যান্ডে গেলে তাকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছেলেকে না পেয়ে প্রতিপক্ষ পারভেজের বাবাকে হত্যা করে বলে স্থানীয়রা জানান।
শুক্রবার মধ্য জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা হান্নান সরকারকে তার নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর ভাষায় সতর্কও করেছিলেন ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ২০ জুন সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দফায় দফায় উপজেলার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে এই সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক), অপরজন কে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছে, অটোরিকশার স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজ্জ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ হয়েছে। আর পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ।
শুক্রবার দিবাগত মধ্য রাতে পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনা বাহিনী, র্যাব, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশসহ বন্দর থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোরভাবে হান্নান সরকারকে সতর্ক করেছিলো বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম।
এরপর আজ শনিবার ফের এমন হামলা করে পান দোকানী কুদ্দুস মিয়াকে হত্যা করা হয়।









Discussion about this post