বুধবার, কাকাডাকা ভোর । নির্বাচনের আর মাত্র তিন দিন বাকী । নগরীর সর্বত্র মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোষ্টার ব্যানার, ফ্যাস্টুনে চেয়ে গেছে পুরো নগরী । সকলেই যেন এই উৎসবে আনন্দ প্রকাশ করে যাচ্ছে এমন বিশাল আয়োজন দেখে। কোন প্রার্থীর পক্ষেও অসভ্যতার চিত্র দেখা যায় নাই । নির্বাচন ঘিরে কোন বিতর্কিত ব্যাক্তিদেরও তেমন আনাগোনা দেখা যায় নাই নগরীতে।
কিন্তু বুধবার ভোরে নগরীতে প্রাতঃভ্রমণকালে ক্রাইমজোনখ্যাত জিমখানার মন্ডলপাড়া ব্রীজের কাছে এসে নগরবাসীর সৃষ্টি আটকে গেছে কয়েকটি বিশাল ফ্যাস্টুনে। অনেকেই দেখছেন আর মন্তব্য করছেন সেই কুখ্যাত ছিনতাইকারী এবং পুরো নারায়ণগঞ্জের ছিনতাইকারীদের মূল হোতা সেই রাশেদ আহমেদ টিটু ওরফে ছিনতাইকারী টিটু ছট করে আবার এতোদিন পর কোথা থেকে এলো ? তাও আবার তৈমূর আলম খন্দকারের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে।
এই টিটুর বাড়ী মুন্সীগঞ্জে অজোপাড়াগাঁয়ে হলে সে দীর্ঘদিন যাবৎ নগরীতে বসবাস করে ছিনতাই করে অসংখ্যবার হাতানাতে আটকও হয়ে কারাবাস করেছেন । ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বেড়িয়ে এই টিটু হাতে সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই । ব্যংকের টাকা ছিনতােই করেও গ্রেফতার হয়েছিলো টিটু । চিহ্নিত এই ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অপরাধের অভিযোগ থাকার পরও নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সহ সভাপতির পদে পদায়ন করে ধিক্কুত হয়ে ফের বহিস্কার করে বিএনপির নেতারা ।
সবশেষ এই ছিনতাইকারী টিটু ২০২০ সালের ২ এপ্রিল করোনা আক্রান্তদের সহায়তা করতে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নামে ৭/৮ জনের সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আটক হয় ।
সেই টিটু এবার বিশাল ফ্যাস্টুন টাঙ্গিয়ে আবার ছিনতাইকারীদের আতুরঘর খ্যাত মন্ডলপাড়ায় নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করে অনেকেই তৈমূর আলম খন্দকারের সমালোচনা করতে দেখা যায় ।
এসময় অনেকেই বলেন, বরাবরের মতো এবারো নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন অথবা এর পূর্বে পৌরসভার শেষ নির্বাচনে উৎসব মূখর পরিবেশে কোন ধরণের হানাহানি, মারামারি, অস্ত্রের ঝনঝনানী, হামলা মামলা, রক্তপাতহীন ও বিতর্ক ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে । শামীম ওসমানকে সারাদেশে গডফাদার হিসেবে তকমা দেয়া হলেও ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টির পরও কোন সন্ত্রাসী অথবা চিহ্নিত অপরাধীদের আস্ফালন দেখা যায় নাই ।
কিন্তু এবার নাসিক নির্বাচনে বিএনপি থেকে অভ্যাহতিপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করেই চলেছেন ।
আওয়ামীলীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকাবস্থায় চিকিৎসক সেলিনা হায়াৎ আইভী নিজ দলের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে গডফাদার বলে মন্তব্য করেন ।এমন মন্তব্যে যেন ফোসকা ফুটে উঠেছে তৈমূর আলম খন্দকারের গায়ে । তৈমূর আলম খন্দকার সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রতিদ্বন্ধী ভাতিজি চিকিৎসক সেলিনা হায়াৎ আইভীকে “গডমাদার“ তকমা দেয়ার চেষ্ট করেন। এমন কয়েকটি ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, “ তৈমূর প্রমাণ দিলেন তিনি শামীমের লোক !”
আইভীর এমন মন্তব্যে সারোদেশের মানুষের দৃষ্টি পরে নারায়ণগঞ্জের দিকে । তাহলে এই নির্বাচনী মাঠে আইভী লড়াই করছেন কার সাথে ? এমন গ্রশ্ন উঠেছে । এমন প্রশ্নেও আবার চিকিৎসক আইভী বলেন , তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপির প্রার্থী কিংবা জনতার প্রার্থীও নন । তিনি গডফাদার শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের প্রার্থী ।
নির্বাচনকে ঘিরে এতো আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্কের পর এবার এই ছিনতাইকারী টিটুর বিশাল ফ্যাস্টুন টাঙ্গানোর ঘটনায় হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার কি বলবেন ? বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালনকালে যেমন অসংখ্য চোর বাটপার প্রতারক বেস্টিত থাকতেন তৈমূর, তেমনি কি নাসিক নির্বচনের পর টিটুর মতো ছিনতাকারীদের দেখা যাবে তার (তৈমূরের) পাশে ?








Discussion about this post