সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন,” আমি ওসমান পরিবারের ভাড়াখাটা বক্তাকে বলবো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জেনে নিন ত্বকীর ঘাতক কারা।“
‘গত মাসে দেখলাম, ওসমান পরিবারের ভাড়াখাটা এক বক্তা বললেন যে, ত্বকীকে হত্যার জন্য ওসমান পরিবারকে কেন দায়ী করা হয় ? তার উদ্দেশ্যে বলছি, ত্বকী হত্যার তদন্ত প্রথমে পুলিশ করেছে । আমরা ওসমান পরিবারকে কেন খুনি-ঘাতক পরিবার বলি তা পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলেই পাওয়া যাবে। এর পরে র্যাব এই হত্যাকান্ডের তদন্ত সম্পন্ন করেছে। তারা একটি অভিযোগপত্র সংবাদ সম্মেলন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। সুতরাং ওসমান পরিবারকে কেন ঘাতক পরিবার বলি তা র্যাবকে জিজ্ঞাসা করলেও পাওয়া যাবে। সর্বপোরি আজ থেকে ৫ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে নারায়ণগঞ্জের কিছু দলীয় লোকজনের সামনে তিনি বলেছিলেন, ত্বকীকে কারা হত্যা করেছিল তা আমি জানি, কারা কারা ত্বকীর হত্যাকারীদের দেশ থেকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছিল আমি তাও জানি এবং সব গোয়েন্দা রিপোর্ট আমার কাছে রয়েছে।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে প্রাঙ্গণে ত্বকী হত্যার ১০৩তম মাসে বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক-প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ওসমান পরিবারের এই ভাড়া খাটা বক্তাদের দায়িত্ব হচ্ছে ওসমান পরিবারের খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির পক্ষে বক্তৃতা করা। তাদের এই অপর্কমের বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের বিষোদগার এবং গীবত গাওয়া হচ্ছে এই ভাড়া খাটা বক্তাদের কাজ। ওসমান পরিবার গোটা নারায়ণগঞ্জকে কুক্ষিগত করতে চায়। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ব্যবসায়িক সংগঠন এবং ক্লাব এগুলোকে তারা পকেটস্থ করতে চায়। কারণ তারা জানে এসব সংগঠনগুলোতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। ওসমান পরিবার বাঘকে যতটা ভয় না পায় তার থেকে বেশি নির্বাচনকে ভয় পায়। কারণ তারা জানে যদি মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে তাদের জামানত থাকবে না।’
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘দেশে বিচারব্যবস্থা স্বাধীন হলে একটি হত্যার বিচারের অভিযোগ তৈরি হয়েও তা সাড়ে আট বছর আটকে থাকে না। ত্বকীর ঘাতকরা যেহেতু সরকার দলীয় সেহেতু ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আমরা এ বৈষম্যমূলক, গণবিরোধী বিচার-ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা সংবিধানে উল্লেখিত জনগণের অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন চাই। স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার, বিচার পাওয়ার অধিকার, ভোট দেয়ার অধিকার, মানবিক মর্যাদানিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার চাই। স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ফিরে পেতে চাই।’
এ সময় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সশাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, জেলা ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আওলাদ হোসেন, জেলা উদীচীর সভাপতি জাহিদুল হক দীপু, জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনি সুপান্থ, সামাজিক সংগঠন বাতায়নের সংগঠক মাইনুদ্দিন মানিক, সিপিবি শহর সম্পাদক সুজয রায় চৌধুরী বিকু, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জেলা সম্পাদক প্রদীপ সরকার প্রমুখ।









Discussion about this post