সদ্য বিদায়ী নারায়ণগঞ্জ থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লার নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড ধামাচাপা দিতে নগরীর (হোয়াইট কালার ক্রিমিনালখ্যাত) লেবাসধারী অপরাধীরা এবার নতুন ওসি শাহাদাত হোসেন কে বিতর্কে ফেলতে তার সাথে সাক্ষাৎ করার নয়া কৌশল অবলম্বন করেছে । নগরবাসীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং কেউ যাতে না দেখে এমন চিন্তা থেকে এবার কালীর বাজার স্বর্ণপট্টির চাঁদাবাজ নানা অপরাধের হোতা নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দানকারী এবং কালীর বাজারের স্বঘোষিত সভাপতি রহমত উল্লাহ ফারুক মধ্যরাতে সদর থানায় হাজির হয়ে সেই পুরানো ভঙ্গিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দপ্তরে অবস্থান নেয়।
এ সময় নব নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন থানার বাইরে অবস্থান করলেও একজন সহযোগীকে সাথে নিয়ে রহমত উল্লাহ ফারুক থানার ওসির কার্যালয়ে অবস্থান নেয়ার এক পর্যায়ে থানায় তার কক্ষে প্রবেশ করেন ওসি শাহাদাত ।
এরপর পুরানো কায়দায় রহমত উল্রাহ ফারুক সেই একই তথ্য প্রদান করে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করেন নতুন এই ওসি শাহাদাতের কাছে । তিনি সাবেক কয়েকজন পুলিশ সুপারের (এসপি) নাম ব্যবহার, কালীর বাজারের স্বর্ণপট্টিতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে পুরো এলাকার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এমন নানা বিষয় উপস্থাপন করা শুরু করেন নতুন ওসির কাছে।
বিদায়ী ওসি আনিচুর রহমানের মতো একই কায়দায় নবনিযুক্ত ওসিকে ম্যানেজ করার অপচেস্টা চালায় রহমত উল্লাহ ফারুক। যার বিরুদ্ধে বিগত সময়ের ওসি আনিচুর রহমান মোল্লার নাম ব্যবহার করে নিজের ফায়দা হাসিল করতে পুরো স্বর্ণপট্টিতে প্রতিমাসে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির জোড়ালো অভিযোগ রয়েছে ।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেনের কাছে নিজের অবস্থান উত্থাপনকালে প্রতিবেদক কালীর বাজার স্বর্ণপট্টিতে ওসি আনিচুর রহমানের নামে প্রতিমাসে বিশাল চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে রহমত উল্লাহ ফারুক বিগত দিনে চাঁদাবাজি হয়েছে বলে স্বীকার করেন এবং ঈদের সময় সকল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছেন বলে ওসিকে জানান। এই বিষয়টি থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর আজিজুর রহমান বিগত দিনে পুলিশের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতেও কঠোর হুসিয়ারাী দেন বলেও স্বীকার করেন রহমত উল্লাহ ফারুক।
জানা যায়, সদর থানায় আনিচুর রহমান মোল্লা যোগদনের পর এই রহমত উল্লাহ ফারুক তার বিরোধপূর্ণ বাড়ি রক্ষা করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করে গোপনে এবং প্রকাশ্যে ওসির নামে চাঁদাবাজি শুরু করে। নগরীর ভূমিদস্যূ হিসেবে পরিচিত জয়নাল আবেদীন স্বর্ণপট্টির রহমত উল্লাহ ফারুকের বসবাস করা এই বাড়ির ওয়ারিশদের কাছ থেকে সম্পত্তি ক্রয় করে দখলে চেষ্টা করলে পুলিশকে নানাভাবে ব্যবহার করে ওয়ারিশদের বিতারিত করে সম্পত্তি নিজের দখলে রেখে ফায়দা হাসিল করছেন মহাধূর্ত এই ফারুক।
একই সাথে বিগত সময়ে ওসি আনিচুরের নাম ব্যবহার করে পুলিশের ভীতি সৃষ্টি করে বিরোধপূর্ণ বাড়ির নীচে স্বর্ণপট্টির নিরাপত্তার নামে সারাদিন রাত ২৪ ঘন্টা পুলিশ প্রহড়ার ব্যবস্থা করে যাচ্ছে । ২৪ ঘন্টা এই প্রহড়ায় থাকা পুলিশকে ব্যবহার করে নিজেকে স্বর্ণপট্রি সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি রেখেছেন রহমত উল্লাহ ফারুক।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে স্বর্ণপট্টির ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, “নানাভাবে থানার নামে, ওসির নামে এবং ডিউটিরত পুলিশ কন্সষ্টেবলদের নামে চাঁদা নেন রহমত উল্লাহ ফারুক ও বিশ্বনাথ পোদ্দারের লোকজন। আমরা কোন কথা কইতে গেলে পুলিশের হয়রানীর ভয় দেখায়। আমরা সনাতন ধর্মলম্বী নিরীহ মানুষ। কেউ গালি দিলে আমরা দাদা বলে ঝামেলা এড়িয়ে চলি। আর কেউ চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করলে নানাভাবে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে বাণিজ্যের বিশাল অভিযোগ তো সকলেই জানেন। আর রহমত উল্লাহর বাড়ির দোতলায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মনিটর বসিয়ে ব্যবসায়ীদের কাজকর্ম পর্যবেক্ষন করে নানাভাবে পুলিশ দিয়ে হয়রানীও করে এই ফারুক । কোন ব্যবসায়ীর কোন ধরণের ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে তার ওই দোতলায় ডেকে নিয়ে ওই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ কার ভিডিও দেখিয়ে ফায়দা হাসিলও করে। প্রতিনিয়তঃ পুলিশের কেউ কেউ নানা ছলছুতোয় অনেকেই হয়রানী করেছেন বলে সকলেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন ব্যবসায়ীরা।”
সরাসরি থানার ওসি কক্ষে রহমত উল্লাহ ফারুকের সামনে দাড়িয়ে উত্থাপিত এমন অভিযোগের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি তো নতুন এসেছি । আমি খোঁজ নেবো এই অভিযোগের।’
Discussion about this post