নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে চিঠি দিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি।
এমন অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন জানায় এ বিষয়টি ঘিরে সৃষ্ট সমালোচনার অবসান ঘটাতে এবং প্রেসক্লাবের সম্মান বক্ষায় দৈনিক সোজা সাপটার সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ, দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি এম আর কামাল ও বিটিভির সাবেক জেলা প্রতিনিধি মাহফুজ কে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়।
বিল্লাল হোসেন রবিনের বিষয়ে উত্থাপিত অভিযোগ পত্রটি হুবহু পাঠকের কাছে তুলে ধরা হলো :
জনাব, যথা বিহিত সম্মাননপূর্বক বিনীত নিবেদন, বিগত এক মাস ধরে বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ‘অবৈধ স্বৈরাচারি সরকারের তান্ডবে বাজারও ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ মানুষ শহীদ হয় এবং রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়। এমনকি লক্ষাধিক মানুষ আহত হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ আগস্ট ওই তান্ডবলীলা থেকে বাংলার ১৮ কোটি মানুষ স্বাধীন, মুক্ত বাংলাদেশ পাই। এতে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে স্বাধীন বাংলাদেশের আনন্দ উপভোগ করে। তবে আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, এখনও একটি কুচক্রি মহল উক্ত স্বাধীনতাকে বানচাল করার জন্য যড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।
আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর আদর্শ বিশ্বাস করি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করি। বহুদলীয় গণতন্ত্র, স্বাধীন মত প্রকাশের পক্ষে বরাবরই সোচ্চার। কখনই কারো বাক স্বাধীনতা হরণের পক্ষে অবস্থানগ্রহণ করা আমাদের দল সমর্থন করে না। আমরাও তা মেনে চলি এবং তা বুকে লালন করি। সাংবাদিকদের পরম বন্ধু মনে করি। এবং বিগত দিনে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্মম নির্যাতন চলাকালে সাংবাদিকদের বন্ধুর মত আমরা সবঙ্গ-র পাশে পেয়েছি। যা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। তবে সাংবাদিকতার আড়ালে যারা পতিত স্বৈরশাসকের মদদপুষ্ট গডফাদারের হয়ে সাধারণ মানুষসহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, সন্ত্রাসীদের সঙ্গ দিয়েছে তাদেরকে এই মহান পেশার কর্মী হিসেবে আমরা মনে নিতে পারি না। মানাও কষ্টকর। বিশ্বাস করি, আপনারাও এমন ব্যক্তিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার পক্ষে নন।
আমরা জানি এবং মানি, আপনাদের প্রেস ক্লাব একটি অরাজনৈতিক, ঐতিহাসিক সংগঠন। রাষ্ট্রের নির্যাতিত, নীপিড়িত মানুষের আভায়হল, একটি নির্ভরযোগ্য ভরাসার জায়গা। অথচ এই ক্লাবের সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন গডফাদার শামীম ওসমানের একনিষ্ঠ অনুসারি। সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী। নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের বাদল-হেলাল পরিষদের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। কলেজে অনেকেই সেসময় ‘ককটেল রবিন’ নামে জানতেন। সেই সূত্র ধরেই তিনি গডফাদার শামীম ওসমানের শীষ্যতৃগ্রহণ করেন। যা বর্তমানেও তিনি অক্ষরে অক্ষরে মনন ও মগজে ধারণও করেন। গত ৫ আগস্টে নারায়ণগঞ্জ থেকে ওই গডফাদার পালিয়ে গেলেও তার পক্ষাবলম্বন করে তার কাছে নারায়ণগঞ্জের সকল তথ্য, চিত্র পাচারকরণ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
এছাড়াও তিনি বিগত দিনগুলোতে গডফাদারের পিএস মান্না, শ্যালক এহসানুল হক নিপুর সঙ্গে প্রতিটি নেতাকর্মী বিরুদ্ধে মিখ্যা মামলা দায়েরকালে নাম, তথ্য, ঠিকানা দিয়ে এজাহারভূক্ত করতেন। এসব কাজ তিনি রাইফেল ক্লাবে বসেই সম্পাদন করতেন। শুধু তাই দয়ঃ চাষাড়ায় অবস্থিত শহীদ জিয়া হলে স্থাপিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাসার অন্যতম পরিকল্পনাকারিও তিনিই ছিলেন। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, সাংবাদিকরা আমাদের বন্ধু, প্রতিপক্ষ নয়। কিন্তু সন্ত্রাসী, গডফাদারের প্রেতাত্মাকে কখনই সাংবাদিক হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্বাস করি এমন ব্যক্তিকে আপনারাও সাংবাদিক হিসেবে গ্রহণ করবেন না।
বিল্লাল হোসেন রবিন, শামীম ওসমানের অন্যতম ক্যাডার একসময়কার ইন্টারপুলের রেড ওয়ারেন্টভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির নিকট হতে প্রেস ক্লাবের নামে প্রতিমাসে ৫, ০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা গ্রহণ করতেন। এছাড়াও তিনি প্রেস ক্লাবের নাম ভাঙ্গিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে চাঁপা আদায় করতেন।
অতএব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির পক্ষ থেকে আকুল প্রার্থনা এই যে, হাজারও শহীদের রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্টে অর্জিত স্বাধীন, মুক্ত বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখার নিমিতে বিল্লাল হোসেন রবিনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাধিত করিলে কৃতজ্ঞ থাকিবো।
Discussion about this post