দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদের ভোটেও অংশ নেবে না। এখন পর্যন্ত এ অবস্থানই চূড়ান্ত বলে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটির ভোটের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এ কারণে চলতি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও দলীয়ভাবে তারা অংশ নিচ্ছে না। তবে অনেক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিএনপির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিচ্ছেন।
সর্বশেষ গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের ভোটে ৯১টি ইউপিতে জয় পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। এ অবস্থায় রাজধানীর উপকণ্ঠের গুরুত্বপূর্ণ নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির কৌশল কী হবে, তা নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে কৌতূহল আছে।
নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত এখনো বহাল আছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল শনিবার বলেছেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। এই সিদ্ধান্ত তো এখনো পরিবর্তন করিনি। ফলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে আমাদের দলীয় প্রতীকে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
যদিও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন জেলা বিএনপির একাধিক নেতা। তাঁদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমুর আলম খন্দকার, মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল আল ইউসুফ খান অন্যতম।
গণমাধ্যম চারজনের সঙ্গেই কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, দল নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে মনোনয়ন চাইবেন।
ইউনিয়ন পরিষদের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের কেউ স্বতন্ত্রভাবে মেয়র প্রার্থী হলে দলের অবস্থান কী হবে, তা জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একটা আনন্দ থাকে। সেটি আমরা বর্জন করেছি। এখন যদি সিটি নির্বাচনে আমরা এর ব্যতিক্রম করি, তা হাস্যকর হয়ে যাবে।’
পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে পরাজিত হন।
বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন বর্জন করলেও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে একধরনের শিথিলতা রয়েছে। এ কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিতে কাউকে মানা করা হয়নি। আবার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কাউকে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিও দেওয়া হয়নি। বরং জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে, এমন প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নিতে স্থানীয়ভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থিতার বিষয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’









Discussion about this post