নারায়ণগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ–মুন্সিগঞ্জসহ পাঁচ রুটে যাত্রীবাহী ছোট লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং বন্ধ করে দেওয়া লঞ্চের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস ও কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন। আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সবুজ সিকদার, কার্যকরী সভাপতি মঈন মাহমুদ, সহসভাপতি জুয়েল প্রধান, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী সানকেন ডেক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা সংবাদ সম্মেলন করে। সংগঠনের চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন ছয় মাসের জন্য লঞ্চগুলো চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সবুজ সিকদার বলেন, গত ২০ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে রূপসী-৯ কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এম এল আফসার উদ্দিন ডুবে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে ৫০০ লঞ্চ শ্রমিক ও কর্মচারী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। রোজা ও ঈদকে সামনে শ্রমিকেরা বেতন–বোনাস না পেয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সবুজ সিকদার আরও বলেন, ‘আমরা কোনো নৌ দুর্ঘটনা ও মানুষের প্রাণহানি হোক সেটা চাই না। কিন্তু এই সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না নিয়ে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় নৌপথে চলাচলরত যাত্রীরা সাধারণ ছোট ট্রলারে করে শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদী দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছেন।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ব্রিটিশ আমল থেকে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর থেকে বিভিন্ন এলাকায় লঞ্চ ও স্টিমারে মানুষ যাতায়াত করত। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ থেকে সাত রুটে ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। নাব্যতা সংকটের কারণে দুটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। সারা দেশে এই লঞ্চের সংখ্যা ৮০০–এর অধিক। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ কোনো সময়সীমা না দিয়ে সানকেন ডেক লঞ্চ চলবে না আখ্যা দিয়ে সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে। তাদের দাবি, নারায়ণগঞ্জ থেকে যেসব রুটে সানকেন ডেক লঞ্চমালিকদের সময় বেঁধে দিয়ে লঞ্চগুলোর আকার বড় করে চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে শ্রমিক-কর্মচারীরা কাজে ফিরতে পারবেন। যাত্রীসাধারণও কম খরচে চলাচল করতে পারবেন।
সবুজ সিকদার বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পারে অসংখ্য কারখানা, ঘাট সেতু নির্মাণ হওয়ায় দিনে দিনে নদী ছোট হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাই নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচ রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বন্ধ লঞ্চের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস ও কাজ ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তাঁরা।
নারায়ণগঞ্জ সানকেন ডেক লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞার পর যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটে সি–ট্রাক ও নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটে এমভি আরিফ ও এমভি সোনার তরী লঞ্চ চালু করেছে বিআইডব্লিউটিএ।









Discussion about this post