আওয়ামীলীগ সরকারের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
শহরের চাষাঢ়া এলাকার বাসিন্দা আবুল বাশার অনিক বাদী হয়ে শনিবার দিবাগত রাতে মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
৫ আগস্ট (সোমবার) চাষাঢ়ায় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তার ছোট ভাই আবুল হাসান স্বজন নিহত হন।
মামলায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলককে নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে এরা পরস্পর পরামর্শ করে ২নম্বর আসামী ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ প্রদান করে সারা দেশের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্য নির্দেশ করে প্রতিটি পাড়া মহল্লায়, ওয়ার্ড ইউনিয়ন, থানা, মহানগর ও জেলায় ছাত্র জনতার যৌক্তিক আন্দোলনকে প্রতিহত ও নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান করেন।
এছাড়া আসামী করা হয়েছে আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক এমপি একেএম শামীম ওসমান, জাতীয় পার্টি দলীয় সাবেক এমপি একেএম সেলিম ওসমান, জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী আবুল হাসনাত মোঃ শহিদ বাদল, প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমান, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আওয়ামীলীগের নেতা নাসির উদ্দিন ওরফে টুন্ডা নাসির, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও শামীম ওসমানের চাচাতো শ্যালক এহসানুল হক নিপু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, শামীম ওসমানের শ্যালক নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহাম্মেদ টিটু, নাসিকের ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, নাসিকের ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-১ আব্দুল করিম বাবু, বান্টি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল, নাসিকের ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি, নাসিকের ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহুল আমিন, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী, বন্দরের ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদ, তামাকপট্টি এলাকার শীর্ষ মাদক স¤্রাট জাতীয় পার্টির নেতা বিটু, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি নেতা দেলোয়ার প্রধান, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জ্বল, নাসিকের ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেন, শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুজিত সাহা, কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, বক্তাবলী পূর্ব গোপালনগর এলাকার বাসিন্দা মৃত আফসার আলীর পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আমলপাড়া এলাকার মোঃ রিফাত, ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার বাসিন্দা আজমেরী ওসমানের ক্যাডার নাসির, আমলপাড়া বড়বাড়ি এলাকার মৃত বাবুল মিয়ার পুত্র শ্যামল, বন্দরের ফুলহর এলাকার ছাত্রলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ, বন্দর তিনগাও উত্তরপাড়া এলাকার আমির মিয়ার পুত্র শুভ, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি নেতা এহসান উদ্দিন আহম্মেদ, কাঁচপুর এলাকার হোসেনের পুত্র ফয়সাল, দক্ষিণ লক্ষণখোলার শ্যামল দাসের পুত্র নির্ঝর দাস, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি টিপু সুলতান, আজমেরী ওসমানের বন্ধু রামু সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসিন, শামীম ওসমানের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন লাভলুর পুত্র মিনহাজুল বিকি, নগর খানপুরের সেলিম মিয়ার পুত্র রিয়েল, গোগনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আজমীরের পুত্র বাপ্পিসহ অজ্ঞাত আরো ১৫০/২০০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে।
শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় নারায়ণগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সাত্তার সংবাদ মাধ্যম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ৷
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টা আগে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয় ৷
সে সময় বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা গ্রামের আবুল হাসান স্বজন গুলিবিদ্ধ হন ৷ পরদিন ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় ৷









Discussion about this post