নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেফতারের সময় পুলিশের সরকারি কাজে বাধাপ্রদান, পুলিশের উপর চড়াও হওয়া এবং তার বাড়িতে সাড়ে ছয় ঘণ্টা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
রবিবার (১৩ মে) রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার দারোগা রিপন মৃধা বাদী হয়ে ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ বিষয়ে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় চারটি ও ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলির মধ্যে একটি মামলা গার্মেন্টসকর্মী মিনারুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত। গত বৃহস্পতিবার ১১ মে রাত ১০টার দিকে জেলা পুলিশের একটি দল অভিযানকালে, আইভীর অনুগত লোকজন আশপাশের মসজিদের মাইক ব্যবহার করে লোক জড়ো করে। দেওভোগের আইভীর বাড়ির আশেপাশে থাকা সড়কের মুখে উশৃঙ্খল কর্মী-সমর্থকরা সিমেন্টের খুঁটি, বালি, ইট, কাঠ, বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পর সারারাত অবরুদ্ধ করে রাকা হয়।
ওসি আরো বলেন, আইভীর বাড়িতে প্রবেশ করলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসিনুজ্জামান, ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ ও ওসি শাহিনুর আলমসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক স্লোগান দেন ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এমন ঘটনায় বলেন, ‘দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকলেও পুলিশ ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুরিশ কোন বলপ্রয়োগ না করে সাবেক মেয়র আইভীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।’
এসপি আরো বলেন, ‘পুলিশ রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কাজ করে। সরকারী কাজে বাধাপ্রদান করলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই হয়, না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।’
পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, ‘রাতের ভিডিও ফুটেজ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দৃশ্য বিশ্লেষণ করে দোষীদের চিহ্নিত করা হবে। একই সঙ্গে নিরীহ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয় সে বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গতঃ, ৮ মে বৃহস্পতিবার রাতে নাসিক এর সাবেক মেয়র আইভীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয় এবং শুক্রবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোট ৫ (পাঁচ) টি মামলার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গার্মেন্ট কর্মী মিনারুল হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে সকালে আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুদ্দিন কাদির তাকে (ডাক্তার আইভী) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।









Discussion about this post