রূপগঞ্জের নানা কারণে ব্যাপকভাবে সমালোচিত এবং এক সময়ের আন্ডা বিক্রেতা থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক সেই রফিকুল ইসলাম যাকে এলাকার সকলেই আন্ডা রফিক বলে ডাকেন তার বিরুদ্ধে এবার জমি দখল, হত্যাচেষ্টা ও লুটপাটের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের নামে দুটি মামলা দায়ের করায় পুরো রূপগঞ্জে ব্যাপকভাবে বিগত সময়ের কুকর্মের ফিরিস্তি উঠে এসেছে সকলের মুখে । আদালত প্রাংগনে অনেকেই আরো বলেন, রফিকুল ইসলাম কে কেউ এই নামে চিনবেই না । তাকে আন্ডা রফিক বললে সকলেই একবাক্যে ই চিনতে দ্বিতীয় বার আর বলতে হয় না।
রোববার (১৯ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুটির আবেদন করেন ভুক্তভোগী আলী আজগর ভূইয়া ও মো. মামুন।
মামলায় রফিকসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করেন মামুন, আর আলী আজগরের মামলায় ৩১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়সার আলমের আদালত শুনানি শেষে মামুনের অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং আলী আজগর ভূঁইয়ার আবেদনটি ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট পবিত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে মো. মামুন জানান, গত ১৭ অক্টোবর আসামিরা তাদের পাঁচ ভাইয়ের মালিকানাধীন ৯৫ শতাংশ জমি রফিক ও মিজানুরের নামে রেজিস্ট্রি লিখে দিতে হুমকি দেন। অন্যথায় তাদের গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা। পরে ১৯ অক্টোবর সকালে আসামিরাসহ আরও অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হুমকি-ধমকি দেন। সর্বশেষ গত ২১ অক্টোবর আসামিরা বাড়িতে এসে হামলা-ভাঙচুর করেন এবং গাভীসহ ঘরের প্রায় ১৬ লাখ টাকার মালামাল লুট করে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যান। এসময় আসামিরা বসতঘর ও গোয়াল ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। পুনরায় তারা জমি রেজিস্ট্রি করে লিখে দিতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
অপর মামলার বাদী আজগর আলী ভূঁইয়া জানান, গত ১৮ নভেম্বর আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তার বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায় এবং আসবাবপত্র, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যান। এসময় আসামিরা দ্রুত জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে লিখে দিতে হুমকি দেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়সার আলমের আদালত শুনানি শেষে মামুনের অভিযোগটি রূপগঞ্জ থানায় এফআইআর করার নির্দেশ এবং আলী আজগর ভূঁইয়ার আবেদনটি ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
রূপগঞ্জের অনেকে আরো জানান, “আন্ডা রফিক ! ভয়ের কারণে এখন নানাভাবে তাকে চেয়ারম্যান বলে ডাকেন অনেকেই !
সে বিগত সময়ে গ্রামের এলাকায় ঘুরে ঘুরে আন্ডা বিক্রি করতো! কিন্তু ক্ষমতা নামক আলাদীনের চেরাগ হাতে পেয়ে একসময় আন্ডা রফিক ইউপি চেয়ারম্যান বনে যায় ! ওই সময়ে সে নিজ ক্ষমতা বলে চারটি পুজামন্ডপের জায়গায় একটি মাত্র পূজামণ্ডপ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং সেই পূজামণ্ডপেই দুর্গাপূজার আয়োজন করতে হবে। অন্যগুলোতে নয়। শুধু তাই নয়, যদি কেউ তার নির্দেশ অমান্য করে তাহলে তাকে হত্যার হুমকিও দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
এ যেন সরকারের ভিতরে আরেক সরকার তৈরি করেছিলো আন্ডা রফিক ।
রংধনু গ্রুপের এই রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। অর্থ আর ক্ষমতা যেন এই রফিকুল ইসলামের হাতে যাদুর কাঠির মতো ধরা দিয়েছে !”
Discussion about this post