রূপগঞ্জে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতার ছেলের দেওয়া আগুনে পুড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার রাত ১১টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি মারা যান।
নিহত নারীর নাম বিউটি বেগম (৫০)।
বিকেলে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের ভক্তবাড়ি এলাকায় ওই নারীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিউটি বেগমের মৃত্যুর বিষয়টি গণমাদ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, নিহত বিউটি বেগমের শরীরে ৭৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
পেট্রোলের আগুনে বিউটি বেগমের মেয়ে শিমু আক্তারও দগ্ধ হয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। শিমু আক্তার একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে হারেজের সঙ্গে একই এলাকার জমি ব্যবসায়ী জাহের আলীর জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এর জেরে সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাবিবুর রহমান ও তাঁর ছেলে মো. মতিন মারধরের শিকার হন। ঝগড়ার সময় বিউটি বেগমের ছেলে বেলায়েত হোসেন জাহের আলীর পক্ষ নেন।
পুলিশ ও ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঝগড়ার জের ধরে বিকেলে হাবিবুর রহমানের আরেক ছেলে মো. জুয়েল দেশি অস্ত্রসহ কয়েকজন লোক নিয়ে বিউটি বেগমের বাড়িতে হামলা চালান। হামলার একপর্যায়ে তাঁরা বিউটি বেগমের বাড়িঘর ভাঙচুর করে তাঁর ঘরের দড়জায় আগুন দেন। আগুন ঘরের পাশে থাকা রান্নাঘরে ছড়িয়ে পড়লে বিউটি বেগম দগ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিউটি বেগমের মেয়ে শিমু আক্তারের হাত ঝলসে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এসে বিউটি বেগম ও শিমু আক্তারকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বিউটি আক্তারকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আবির হোসেন বলেন, বাড়িঘরে হামলা ও আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে অভিযুক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে রাত সাড়ে ১১টায় তিনি জানিয়েছেন।
বিউটি বেগমের বাড়িতে আগুন দেওয়ার পর থেকে হাবিবুর রহমান ও তাঁর ছেলেরা পলাতক। ফলে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাড়িতে আগুন দেওয়া জুয়েল এলাকায় নিজেকে যুবলীগের নেতা বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
Discussion about this post