সোনারগাঁ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবক মারা গেছেন; আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৮ জন৷
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটার দিকে পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগা গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানান সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোহসীন মিয়া৷
সংঘর্ষে নিহত ২৪ বছর বয়সী যুবক পারভেজ হোসেন ওই গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে৷
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, বিকাল ৫টার দিকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে আনা হলে পারভেজকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক৷
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার পিরোজপুর ইউপির কান্দারগাঁও গ্রামে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন ও আওয়ামী লীগ সমর্থক জসিম উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত পারভেজসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয় বলে জানায় পুলিশ৷
আহতদের মধ্যে রুহুল আমিন (৩৮), মো. রিটন (৩৪), রিদয় (২৮), আক্তার হোসেন (৪৩) যুবলীগ নেতা জাকিরের সমর্থক৷ অপরদিকে, দেলোয়ার হোসেন, (৪০) জামান (২৭), কামাল (৩৫), মহসিন (৪২) জসিমের সমর্থক।
এদের মধ্যে জাকির হোসেনের ছোটভাই রুহুল আমিন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত পারভেজও জাকিরের সমর্থক ছিলেন৷
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাকির ও জসিম দুজনেই বালু উত্তোলন ও ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা উভয়ই তাদের ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্থে স্থানীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়৷ এর জেরে আগেও বেশ কয়েকবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে জুমার নামাজের সময় স্থানীয় মসজিদে ভবনাথপুর থেকে কান্দারগাঁও গ্রাম পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি স্থানীয় লোকজন উপস্থাপন করলে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র, টেঁটা ও বাঁশের লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জসিম ও তার লোকজন কোনো উসকানি ছাড়াই তাদের ওপর হামলা চালায়। তার এক সমর্থক মারা গেছে এবং তার ছোটভাই হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় রয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে তার ভাগ্নেকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন৷
এদিকে, এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য জসিম উদ্দিনের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত এক দশকে অবৈধ বালু উত্তোলন, নির্মাণ ব্যবসা এবং স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কান্দারগাঁও গ্রামে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে আজ সংঘর্ষে নিহতের খবর ছড়ানোর পর কান্দারগাঁও গ্রামে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তবে, সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোহসীন মিয়া জানান, গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post