‘সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সে জমি উদ্ধারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। নারায়ণগঞ্জের জমি উদ্ধারের জন্য সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠিত হয়েছে। বুঝলাম ‘শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা’ দেয়া হয়েছে। এখন আমরা দেখতে চাই নারায়ণগঞ্জে কতটা জমি উদ্ধার হয়। হলে সাধুবাদ জানাবো। কিন্তু উদ্ধারকৃত জমি ভূমিদস্যুদের পেটে যাবে, তা হতে দেয়া হবে না।’
এভাবেই নারায়ণগঞ্জের রেলওয়ের জমি উদ্ধারের জন্য সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠনের বিষয়টিকে ‘শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা’ দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ ভূমিরক্ষা সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি।
রোববার (৯ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ে (কর্মচারী) কল্যাণ ট্রাস্টের নামে মার্কেট নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
মানববন্ধনে রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সংবাদপত্রে দেখলাম সারাদেশে রেলওয়ের ৬ হাজার ৭২৭ একর বেদখল জমি রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে চিহ্নিত একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়েসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার জমি দখলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বহু সরকারি জমি এসব সংস্থার অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে তারা আত্মসাৎ করে নিয়েছে। তারা রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের নামে ১ নম্বর রেলগেটের কাছে ইতোপূর্বে দুটি মার্কেট নির্মাণ করেছে। পরে ৪৭ হাজার ২০০ বর্গফুট জমি দখল করে তৃতীয় মার্কেট নির্মাণের পায়তারা শুরু করে ২০১২ সালে। আন্দোলনের মুখে তখন তা বন্ধ করলেও ২০২২ সালে আবার তারা সে জায়গা দখলের কার্যক্রম শুরু করে। মার্কেট বানানোর কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ইতোমধ্যে প্রায় শত কোটি টাকা তারা তুলে নিয়েছে বলে সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।’
সংগঠনের সদস্যসচিব ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এই সময় আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’ সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ নুরুদ্দিন, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা কমিটির সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, মোটরমেকানিক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম, মহিলা পরিষদ জেলা সংগঠক শোভা সাহা, সামাজিক সংগঠন সমমনার উপদেষ্টা দুলাল সাহার উপস্থিতিতে রফিউর রাব্বি আরো বলেন, ‘রেলষ্টেশন, নৌ-টার্মিনাল ও বাসস্ট্যান্ড একসাথে হওয়ায় এখানে একদিকে রাজউক তাদের বিশদ অঞ্চল পরিকলাপনায় (ড্যাপ) মাল্টিমোডাল পরিবহন হাব নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে, পাশাপাশি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (আরএসটিপি) পরিকল্পনাতেও তা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে শীতলক্ষ্যা নদীর পুর্ব-পশ্চিম পাড়ের সংযোগের জন্য যে কদমরসুল সেতু তৈরি হচ্ছে তার পথও এইটি। সুতরাং কোন ভাবেই এখানে মার্কেট হতে দেয়া যাবে না।’
Discussion about this post