আওয়ামী লীগ সরকার ও শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আভাস পেয়েই নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের চিহ্নিত নেতাকর্মীরা।
একই সাথে স্বপরিবারে পালিয়ে গেছেন সিংহপুরুষ হিসেবে দাবী করা নানাভাবে সমালোচিত শামীম ওসমান ।
বিক্ষুব্ধ জনতা বিকালে শহরের জামতলায় শামীম ওসমানের বাড়ি ও চাষাঢ়া রামবাবুর দিঘিরপাড়ে সেলিম ওসমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এছাড়া শহরের কলেজ রোডে তাদের ভাতিজা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
এ সময় লুটপাট করে নিয়ে গেছে তাদের বাড়ির আসবাবপত্রসহ সকল মালামাল। এবং প্রয়াত নাসিম ওসমানের মালিকানাধীন ভবনের নিচে হোয়াইট হাউজ নামে রেস্টুরেন্টে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে শহরের চাষাঢ়ায় শামীম ওসমানের সভাস্থল হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস ক্লাবে তৃতীয় দফায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শামীম ওসমান এই ক্লাবে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করতেন। এছাড়া শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এই ক্লাবের সভাপতি শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতির বাড়ি-ঘরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
এ ছাড়াও আড়াইহাজারে সদ্য সাবেক জাতীয় সংসদের হুইপ নজরুল ইসলাম বাবুর বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে তার দ্বারা হামলা-মামলার শিকার এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে নির্যাতিত বিক্ষুব্ধ লোকজন।
ওদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর লুটপাট করা হয়েছে। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে আড়াইহাজার থানায়।
ওদিকে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের খবরে দলমত নির্বিশেষে লাখো ছাত্র-জনতা নারায়ণগঞ্জের রাস্তায় নেমে আসে। তাদের বাঁধ ভাংগা উচ্ছাস আনন্দে এক অন্যরকম দৃশ্যের অবতারণা হয়। শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ নারী-পুরুষ কেউ যেন ঘরে বসে নেই। সবাই বেরিয়ে এসেছে শহরের চাষাড়ায়। সেখানে বিজয়স্তম্বের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আনন্দ-উচ্ছাস প্রকাশ করে তারা। পুরো শহর আনন্দ মিছিলে প্রকম্বিত হয়ে উঠে। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নেচে গেয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে ছাত্র-জনতা। এসময় তারা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে নানা স্লোগান দেয়। তারা অনুভুতি প্রকাশ করেন, আমরা ৭১ দেখি নাই। শুনেছি। আজ ২৪ দেখলাম। বিজয়ের যে কি আনন্দ তা বলে বুঝানো যাবে না। এতো দিন কথা বলতে পারিনি। প্রতিবাদ করতে পারিনি। বাক স্বাধীনতা ছিল না। আজ আমরা স্বাধীন।
Discussion about this post